শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৬:৪০:০৪

‘ব্লাড রোজ’ গ্রুপের ৮ নারী জঙ্গি র‌্যাবের নজরদারিতে

‘ব্লাড রোজ’ গ্রুপের ৮ নারী জঙ্গি র‌্যাবের নজরদারিতে

নিউজ ডেস্ক : অপারেশন আজিমপুরে নাম আসা প্রিয়তি, শায়লা এবং আবিদার মতোই নিউ জেএমবির আরও ভয়ংকর ৮ নারী জঙ্গিকে নজরদারিতে আনা হয়েছে। র‌্যাবের গোয়েন্দারা ঈদের ছুটিতে তাদের সবার অবস্থান শনাক্ত করে কৌশলে নজরদারিতে আনতে সক্ষম হয়েছে।

আটজনের মধ্যে আছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। রয়েছে দু’জন চাকরিজীবীও। তারা সবাই ‘ব্লাড রোজ’ নামে একটি গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপের সদস্যরা ইন্টারনেটে নিজেদের মধ্যে কথিত আইএসের মতাদর্শগত বিভিন্ন অডিও-ভিডিও এবং প্রকাশনার তথ্য আদান-প্রদান করে। র‌্যাবের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

সম্প্রতি র‌্যাবের গোয়েন্দারা এক নারী চিকিৎসক ও মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকেই একটি তালিকা পাওয়া যায়। সে তালিকার আট জঙ্গি ঈদের ছুটিতে নিজের বাড়িতে ফিরে। আর তখনই তাদের নজরে আনে গোয়েন্দারা। এরা উচ্চশিক্ষিত নারী জঙ্গি।

র‌্যাব সূত্র জানায়, যাদের নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে তারা সবাই মিরপুর থানায় দায়ের করা একটি মামলার আসামি। এরা হল, তাসনুবা ওরফে তাহিরা, মাইমুনা ওরফে মাহমুদা ওরফে লায়লা, আলিয়া ওরফে তিন্নি ওরফে তিতলী, মনিরা জাহান ওরফে মিলি, ছাবিহা ওরফে মিতু, সাফিয়া ওরফে সানজিদা ওরফে ঝিনুক, দিনাত জাহান ওরফে নওমী ওরফে বাণী ও তানজিলা ওরফে মুন্নী। এরা সবাই কোড নামে সক্রিয় নতুন ধারার জেএমবিতে।

দায়িত্বশীল একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার ডাক্তার ইসতিসনা আক্তার ঐশী, মানারাতের শিক্ষার্থী ও জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়া ছাত্রী সংস্থার নেত্রী আকলিমা রহমান মনি, ইসরাত জাহান মৌ ও খাদিজা পারভীন মেঘলার সঙ্গে উল্লিখিত নারী জঙ্গিদের বন্ধুত্ব রয়েছে। তারা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি সংক্রান্ত বৈঠকে বসত।

নজরদারিতে থাকা এক জঙ্গি অকপটে র‌্যাবের কাছে তথ্য দিয়ে স্বীকার করে, ছাত্রী সংস্থার নেত্রী রাবেয়া বিনতে আজহারের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন স্থানে বৈঠকগুলোতে অংশ নেয়। তারা নিজেদের মধ্যে আইএসের দাবিক ম্যাগাজিন, অডিও-ভিডিও বার্তা, আইএস সংক্রান্ত নানা তথ্য আদান-প্রদান করত।

আইএসের কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করতে ‘নিজ ফোরাম’ থাকা নারীদের ‘ছবক’ দিত। ওই নারী জঙ্গি আরও স্বীকার করে, তাদের দলের মেয়েরা বাংলা, আরবি, ইংরেজি ও হিন্দিসহ চারটি ভাষায় কথা বলতে পারে। এই দলের সাংগঠনিক নেত্রী রাবেয়া বিনতে আজাহার সবাইকে পাকিস্তানে সফরের দাওয়াত দিয়েছে বলেও তারা স্বীকার করেছে।

এ প্রসঙ্গে র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি খন্দকার লুৎফুল কবীর বলেন, চার নারী জঙ্গির মাধ্যমে তাদের দলের আরও কয়েকজন নজরদারিতে আনা হয়েছে। যে কোনো সময় তাদের গ্রেফতার করা হবে। নারী জঙ্গি নিয়ে র‌্যাবের কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য আছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।

ঈদের আগে রাজধানীর আজিমপুরের একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। ওই আস্তানা থেকে গুলশান হামলার আরেক মাস্টারমাইন্ড শীর্ষ জঙ্গি নুরুল ইসলাম মারজানের স্ত্রী আফরিন ওরফে প্রিয়তি ও তানভীর কাদেরি ওরফে আবদুল করিমের স্ত্রী আবিদা তুল ফাতিমা এবং বাসারুজ্জামানের স্ত্রী শায়লা আফরিনকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়।

যারা নিউ জেএমবির নারী শাখার অন্যতম জঙ্গি নেত্রী। এছাড়া আস্তানাটি থেকে পালিয়ে যায় অপারেশন রূপনগরে নিহত জঙ্গি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলা। এক গোয়েন্দারা কর্মকর্তা বলেন, এই তিনজনের মতোই উল্লিখিত আট নারী জঙ্গি ভয়ংকর প্রকৃতির। তাদের গ্রেফতারের পরই জানা যাবে জঙ্গি সংক্রান্ত আরও তথ্য। - যুগান্তর
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে