নিউজ ডেস্ক: ঢাকার আশুলিয়ার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩০ লাখ টাকাসহ সন্দেহভাজন এক জঙ্গিকে আটক করেছে র্যাব, যিনি ‘নব্য জেএমবির’ প্রধান অর্থদাতা বলে বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন।
র্যাবের পরিচালক (মিডিয়া) মুফতি মাহমুদ খানবলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার বাইপাইলের বসুন্ধরা এলাকার একটি বাড়িতে অভিযানে যান তারা। বাড়ির মালিক আব্দুর রহমানকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়।
তার বাড়ি থেকে ৩০ লাখ টাকা, একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ, ধারালো অস্ত্র, মোবাইল জ্যামার ও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
“আব্দুর রহমানই জেএমবির সব নাশকতার মূল অর্থদাতা,” বলা হয়েছে র্যাবের এক এসএমএসে। তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যকেও আটক করা হয়েছে বলে মুফতি মাহমুদ জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিডিনিউজের সাভার প্রতিনিধিকে জানান, বসুন্ধরা এলাকার আমীর মৃধার পাঁচতলা ভবন ‘মৃধা ভিলায়’ র্যাব-৪ এর সদস্যরা অভিযান চালান। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পঞ্চমতলার বারান্দার গ্রিল কেটে একজন নিচে লাফিয়ে পড়েন। পরে তাকে আটক করে নিয়ে যান র্যাব সদস্যরা।
এর আগে শনিবার ভোর থেকে গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে র্যাব ও পুলিশের পৃথক তিন অভিযানে সন্দেহভাজন ১১ জঙ্গি নিহত হন। গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন নিহত হন। কানাডা প্রবাসী তামিম আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ‘নব্য জেএমবি’ এই হামলা চালায় বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
এরপর ২৫ জুলাই রাতে কল্যাণপুরের একটি বাড়িতে পুলিশের অভিযানে সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি নিহত হন, যারা উগ্রবাদী এই গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন বলে পুলিশ জানায়।
এর পর মাসখানেকের মাথায় নারায়ণগঞ্জে পুলিশের এক অভিযানে তামিম নিহত হন। পরে মিরপুরের রূপনগর ও আজিমপুরের দুটি বাসায় পুলিশের অভিযানে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম এবং সাবেক ব্যাঙ্কার তানভীর কাদেরীও এই জঙ্গি গোষ্ঠীতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।
গুলশান হামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, এই হামলায় যারা নানাভাবে জড়িত ছিলেন তাদের পাশাপাশি অর্থদাতাদেরও খুঁজে বের করতে কাজ করছেন তারা।
এরমধ্যে শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নোয়াগাঁও আফারখোলা পাতারটেক এলাকার একটি বাড়িতে পুলিশের অভিযানে সাতজন নিহত হন। তাদের মধ্যে ‘নব্য জেএমবির’ বর্তমানের শীর্ষ নেতা আকাশ রয়েছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নিশ্চিত তামিম চৌধুরীর পরে যে জঙ্গিদের নেতৃত্ব দিত, তার ছদ্মনাম হোক আর টাইটেল নাম হোক, তার নাম আকাশ। সে এখানে নিহত হয়েছে। নিহত এই সাতজনের মধ্যে সে একজন।”
এই জঙ্গি গোষ্ঠীর যেসব সদস্য এখনও আইনশৃ্ঙখলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে তারা এই ‘আকাশের’ নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছিল বলে জানান তিনি। ওই অভিযান শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আশুলিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠীটির মূল অর্থদাতাকে ধরার কথা জানাল র্যাব।
০৮ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/আ শি/ এএস