সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৬, ০২:১৮:১৪

গুলশান হামলার তদন্তের ১০০ দিন, রহস্য উন্মোচনের খোঁজ খবর

গুলশান হামলার তদন্তের ১০০ দিন, রহস্য উন্মোচনের খোঁজ খবর

নুরুজ্জামান লাবু : রাজধানীর গুলশানে জঙ্গি হামলার তদন্তের ১০০ দিন অতিবাহিত হতে যাচ্ছে আজ (সোমবার)।গত ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এর দুদিন পর থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে নবগঠিত কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। মামলার তদন্তে প্রথমেই উঠে আসে নব্য জেএমবির নাম। শুরু হয় নিবিড় পর্যালোচনা ও অনুসন্ধান। গুলশান হামলার ১০৩ দিন অতিবাহিত হলেও তদন্ত সংস্থা সিটিটিসি-এর ১০০ দিনের তদন্তে এই ঘটনার বিভিন্ন বিষয়ের রহস্য উন্মোচন হয়েছে।

গুলশান হামলায় অংশ নেয়া ৫ হামলাকারীসহ এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪-২৫  জনের নাম এসেছে। হামলার বিভিন্ন পর্যায়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।এই মামলায় গ্রেফতার রয়েছে দুজন। তাদের একজন জিম্মি অবস্থায় উদ্ধার হওয়া হাসনাত করিম ও অপরজন কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেফতার হওয়া রাকিবুল হাসান রিগ্যান। রিগ্যান ইতোমধ্যে দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।

গুলশান হামলা
গুলশান হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি ২২ নাগরিক নিহত হন।পরে সেনা কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারীসহ ছয় জন। এই হামলার পরপরই জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযান নিয়ে নড়েচড়ে বসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা। অর্থের যোগানাদাতা থেকে শুরু করে অস্ত্র সরবরাহকারী,হামলার মাস্টারমাইন্ড,গ্রেনেড সরবরাহকারীদের নাম, হামলাকারীদের কারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে, কোথায় কোথায় প্রশিক্ষণ হয়েছে এবং হামলার সমন্বয়কসহ বিস্তারিত রহস্য উদ্ঘাটন করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

গুলশান হামলা মামলার তদন্তের অন্যতম তদারক কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, গুলশান হামলার তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাস্টারমাইন্ড, অর্থ ও অস্ত্রের যোগানদাতাসহ অনেককেই সনাক্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে।

গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম
তদন্তের ১০০ দিনের মধ্যেই গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ডকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এই মাস্টারমাইন্ড হলো বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহম্মেদ চৌধুরী। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর তামিম কানাডা থেকে দুবাই হয়ে ইতিহাদ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসে। এরপর থেকেই সে নব্য জেএমবির অপারেশনাল মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ শুরু করে।

মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, তামিমের বাবার নাম শফিক আহমেদ চৌধুরী। মায়ের নাম খালেদা শফি চৌধুরী। তামিমের বাবা-মা স্বাধীনতার পর স্বপরিবারে কানাডায় চলে যায়। তামিম সর্বশেষ কানাডার অন্টারিওর উইন্ডসরে থাকতো। বাংলাদেশে তাদের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার দোবাক ইউনিয়নের বড়গ্রাম সাদিমাপুরে। তামিমের দুটি পাসপোর্ট নম্বর পেয়েছে তদন্ত সংস্থা। তা হলো এএফ-২৮৩৭০৭৬ এবং এল- ০৬৩৩৪৭৮। পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৮৬ সালের ২৫ জুলাই।

তদন্ত সূত্র জানায়, নব্য জেএমবির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তামিম চৌধুরী আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতো। গত ২৭ আগস্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এক অভিযানে তামিম আহম্মেদ চৌধুরী দুই সহযোগীসহ নিহত হয়।

গুলশান হামলার সমন্বয়ক ছিল মারজান
মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, গুলশান হামলার সমন্বয়ককেও সনাক্ত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এই হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিমের নির্দেশনা অনুযায়ী সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছে নূরুল ইসলাম মারজান। মারজানকে সনাক্ত করলেও তাকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি সিটির কর্মকর্তারা।

তদন্ত সূত্র জানায়, তারা অনুসন্ধানে জানতে পেরেছেন গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার আগে অপর একটি রেস্টুরেন্টে হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু মারজানই প্রথমে হোলি আর্টিজান বেকারি আবিষ্কার করে। সেখানে প্রবেশ সহজযোগ্য এবং সন্ধ্যার পর বেশি সংখ্যক বিদেশি নাগরিক অবস্থান করেন। পরবর্তীতে মারজানের পরামর্শ অনুযায়ী তামিম হোলি আর্টিজানকে টার্গেট করার নির্দেশনা দেয়। মারজানের সমন্বয়ে সহযোগিতা করে রাজীব গান্ধী নামে আরেক জঙ্গি। মারজানের মতো রাজীবও পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার সময় তামিম ও মারজান গুলশান এলাকাতেই অবস্থান করেছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে এবং গণমাধ্যমে জঙ্গি হামলার বিষয়টি প্রচারতি হওয়ার পর তারা গুলশান থেকে কল্যাণপুরের আস্তানায় চলে যায়।

হামলাকারীদের প্রশিক্ষণ দেয় তারেক, রিগ্যান ও জাহিদ
তদন্ত সূত্র জানায়, গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া হামলকারীদের গাইবান্ধা ও বগুড়ার কয়েকটি স্থানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া পাঁচ জন ঝিনাইদহ, বগুড়া ও ঢাকার শেওড়াপাড়া, কল্যাণপুর এবং সর্বশেষ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থান করে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে তাদের অস্ত্র ও গ্রেনেড চার্জের প্রশিক্ষণ দেয় রায়হান কবির ওরফে তারেক, জাহিদুল ইসলাম। তারেক ও জাহিদ অস্ত্র ও গ্রেনেড চালনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও রিগ্যান ধর্মীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতো বলে তদন্ত সংস্থা জানতে পেরেছে।

এই দুই প্রশিক্ষকের একজন রায়হান কবীর ওরফে তারেক গত ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অভিযানে নিহত হয়। আর আহত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয় রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে। রিগ্যানকে প্রথমে কল্যাণপুরের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাকে গুলশান মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গুলশানের মামলাতেও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে রিগ্যান। বর্তমানে সে কারগারে রয়েছে। আর ২ সেপ্টেম্বর মিরপুরের রূপনগরে এক অভিযানে মারা যায় সেনাবাহিনীর মেজর পদ থেকে অবসর নেওয়া জাহিদুল ইসলাম।

অর্থ আসে বিদেশ থেকে, গ্রহণ করে বাশারুজ্জামান
সূত্র জানায়, গুলশান হামলার অর্থ আসে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই থেকে। তামিমের মাধ্যমে গুলশান হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ১৪ লাখ টাকা আসে। তামিমের নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ পথে আসা এই টাকা গ্রহণ করে বাশারুজ্জামান ওরফে রাহুল ওরফে চকলেট।

তদন্ত সূত্র জানায়, নব্য জেএমবি পরিচালনার জন্য অর্থের বিষয়টিও দেখভাল করতো তামিম নিজেই। সংগঠনের সদস্যদের থাকা-খাওয়া, অস্ত্র ও গোলাবারুদ ক্রয়সহ অন্যান্য কাজের জন্য এসব টাকা বাশারুজ্জামান ও তানভীর কাদেরী  ব্যবহার করতো। এরই ধারাবাহিকতায় দুবাই থেকে আসা পুরো টাকাটাই গুলশান হামলা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়।

সিটি সূত্র জানায়, বাশারুজ্জামানের বিষয়ে সব তথ্য পেলেও তাকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি তারা। তবে গত ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বাশারুজ্জামানের স্ত্রী শায়লা আফরিনকে গ্রেফতার করেছে সিটি।

হামলাকারীদের আশ্রয়দাতা তানভীর কাদেরী
মামলার তদন্ত সংস্থা অনুসন্ধান করতে জানতে পেরেছে, গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া পাঁচ হামলাকারী রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, মীর সাবিহ মোবাশ্বের, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম পায়েলের আশ্রয়দাতা হিসেবে কাজ করে তানভীর কাদেরী। সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তানভীর কাদেরী রূপনগরে বাসা থাকার পরও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আরেকটি বাসা ভাড়া নেয়। তানভীর কাদেরীর ১৪ বয়সী ছেলে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও এসব তথ্য জানিয়েছে।

তদন্ত সূত্র জানায়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই ব্লকের ৬ নম্বর সড়কের ৩০১/এ প্লটের টেনামেন্ট ৩ এর এ/৬ ফ্ল্যাটটি মূলত গুলশান হামলাকারীদের থাকার জন্যই ভাড়া নেওয়া হয়। তানভীর কাদেরী তার স্ত্রী ও জমজ দুই সন্তান নিয়ে ওই বাসায় ওঠার কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে গুলশান হামলায় নিহত পাঁচ জঙ্গি ওঠে। তামিম, মারজান ও চকলেট তাদের নিয়ে বসুন্ধরার ওই বাসায় ওঠে।

গুলশান হামলার ঘটনার দিন ১ জুলাই বিকেলে তামিম পাঁচ হামলাকারীকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে বসুন্ধরার বাসা ছেড়ে রূপনগরের বাসায় পরিবারসহ ফিরে যায় তানভীর কাদেরী।

সূত্র জানায়, তানভীর কাদেরী মূলত নব্য জেএমবির সদস্যদের আশ্রয়দাতা হিসেবে কাজ করতো। দুই সন্তান ও স্ত্রী খাদিজাসহ পরিবারের সবাই জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িত হওয়ায় তারা মিথ্যা পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে জঙ্গি সদস্যদের আশ্রয় দিতো।

গত ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি আস্তানায় সিটির অভিযানে তানভীর কাদেরী নিহত হয়। তার স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে আশা ওরফে খাদিজা ও এক সন্তান তাহরীমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। খাদিজা বর্তমানে সিটির রিমান্ডে ও ছেলে তাহরীম টঙ্গির কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছে।

অস্ত্র ও গ্রেনেড সরবরাহ করেছে সোহেল মাহফুজ
তদন্ত সূত্র জানায়, গুলশান হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গ্রেনেড সরবরাহ করেছে পুরনো জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা সোহেল মাহফুজ। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের দাবি, সোহেল মাহফুজ বর্তমানে নব্য জেএমবির হয়ে কাজ করছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এসব অস্ত্র ও গ্রেনেড আনা হয় বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। মামলার তদন্ত ও বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সোহেল মাহফুজ পুরনো জেএমবিতেও অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহের দায়িত্বে ছিল।

বেশ কয়েকবছর ধরে সোহেল মাহফুজ ভারতে গিয়ে আত্মগোপনে রয়েছে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সিটি কর্মকর্তারা সোহেল মাহফুজকে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের যোগানদাতা হিসেবে চিহ্নিত করলেও তাকে এখনও ধরতে পারেনি। সিটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোহেল মাহফুজকে ধরতে নিয়মিত গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চলানো হচ্ছে।

তাহমিদকে অব্যাহতি, হাসনাত এখনও কারাগারে
গুলশান হামলার ঘটনায় জিম্মি অবস্থায় উদ্ধার হওয়া হাসনাত করিম ও তাহমিদকে নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। হামলকারীদের সঙ্গে কথিত স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথা বলার ছবি প্রকাশ হওয়ার পর হাসনাত-তাহমিদকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও হামলার ৩৪ দিন পর ৪ আগস্ট তাদের দু’জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর তাদের কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরবর্তীতে ৯ দিনের মাথায় ১৩ আগস্ট হাসনাত করিমকে প্রথম গুলশান মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর তারা তাহমিদের বিষয়ে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পাননি। একারণে তাকে ৫৪ ধারার প্রসিকিউশন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরপর গত ২ অক্টোবর আদালত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর ওইদিনই কারামুক্ত হন তাহমিদ হাসিব খান। তবে হাসনাত করিম এখনও কারাগারে রয়েছেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, হাসনাতের বিরুদ্ধে এখনও গুলশান হামলায় জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পাননি তারা। আরও অনুসন্ধানের পর প্রমাণ না পেলে মামলার চার্জশিটে  তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।

জিম্মি থাকা ৩২ জনের ১৪ জন স্বাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তি
গুলশানের জঙ্গি হামলার ঘটনায় মোট ৩২ জিম্মিকে উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।এর মধ্যে ১৪ জন সাক্ষী হিসেবে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এর মধ্যে সত্য প্রকাশ নামে একজন ভারতীয় নাগরিকও রয়েছেন। এছাড়া, ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হোলি আর্টিজান বেকারির কর্মচারীদের পাশাপাশি জিম্মি থাকা তাহমিদের দুই বান্ধবী তাহানা তাসমিয়া ও ফাইরুজ মালিহাও সাক্ষী হিসেবে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তদন্ত সূত্র জানায়, সাক্ষীদের জবানবন্দি পর্যালোচনা করে তারা গুলশান হামলার ঘটনায় রাতভর হোলি আর্টিজান বেকারির ভেতরে কি ঘটেছিল, তার একটি চিত্র পেয়েছেন। মূলত সাক্ষীদের জবানবন্দি ও অন্যান্য অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই সন্দেহভাজন জিম্মি তাহমিদ হাসিবকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ অ্যাপসের ব্যবহার
তদন্ত সূত্র জানায়, গুলশান হামলার পর তদন্তে হামলাকারীদের বিশেষ কয়েকটি অ্যাপস ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।এসব অ্যাপসের মাধ্যমেই হামলাকারী জঙ্গিরা ভেতর থেকে হত্যাকাণ্ডের পর ছবি তুলে মাস্টারমাইন্ড তামিম ও সমন্বয়ক মারজানের কাছে পাঠায়। মাস্টারমাইন্ড তামিম সেসব ছবি আইএসের আমাক এজেন্সির কাছে পাঠালে তারা তা প্রকাশ করে।

তদন্ত সূত্র জানায়, অ্যাপসের মাধ্যমে জঙ্গিদের যোগাযোগের যে নেটওয়ার্ক ইতোমধ্যে গোয়েন্দারা তার কয়েকটির রহস্য ভেদ করে তথ্য উদ্ধার করেছেন। -বাংলা ট্রিবিউন।
১০ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে