কাজী সোহাগ : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বাকি পদগুলোতে আসছে আরো নতুন মুখ। ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী নেতা এবং যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা স্থান পাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। আজ দলের প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে বাকি পদগুলোর বিষয় চূড়ান্ত হলে আগামীকালই তা প্রকাশ করা হতে পারে।
আজ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে নবনির্বাচিত প্রেসিডিয়ামের প্রথম বৈঠক বসছে। এদিকে নতুন কমিটিতে স্থান পেতে পদ প্রত্যাশীদের চলছে নানা তৎপরতা। ২৩শে অক্টোবর সম্মেলনের দিন এরপর মঙ্গলবার মিলে দুই দফায় আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে ৪৩ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি রয়েছে আরো ৩৮ সদস্যের নাম। এর মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর তিনজন, দুজন উপ-সম্পাদকসহ সাত জন সম্পাদক এবং ২৮ জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। বাকি থাকা এই ৩৮ পদে সুযোগ পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন পদপ্রত্যাশীরা।
আগামীকাল কমিটির বাকি সদস্যদের নাম ঘোষণা হতে পারে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনয়ন দেন। এর বাইরে উপদেষ্টা পরিষদ, জাতীয় কমিটি ও সহ-সম্পাদক পদও রয়েছে। দলের গঠনতন্ত্রে এসব কমিটি নির্বাচনে দলীয় সভাপতিকে একক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-আলম হানিফ গতকাল বলেন, প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে বাকিদের নাম হয়তো চূড়ান্ত করা হবে। পরে শনিবার তাদের নাম প্রকাশ করা হতে পারে। সম্মেলনের পরদিন সোমবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা জানিয়েছিলেন। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সম্পাদকমণ্ডলীর ২২ পদের নাম ঘোষণা হয়।
এদিকে মঙ্গলবারও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের নাম ঘোষণাকালে আগের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি আগেই বলেছি, এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি ঘোষণা করা হবে। আমরা সেটাই করতে চাই। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৩৪ জন সম্পাদকমণ্ডলীর পদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ২৭টি পদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি সাতটি পদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কৃষি ও সমবায়, পরিবেশ ও বন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, যুব ও ক্রীড়া, উপ-দপ্তর, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা পদে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এছাড়া রয়েছে ২৮টি সদস্য পদ।
দলের নেতারা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা যোগ্য ও ত্যাগীদেরই পদে বসাবেন। আর পদ পাওয়ার জন্য যে কারোরই প্রত্যাশা বা প্রচেষ্টা থাকতে পারে। তবে, বাকি পদগুলোতে কে বা কারা আসবেন, সেটা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাই ঠিক করবেন। কারণ কাউন্সিলররা তাকে এই ক্ষমতা দিয়ে গেছেন। ওবায়দুল কাদেরের ঘোষণা অনুযায়ী কমিটিতে আরো নতুন মুখ আসবে। নতুন রক্ত সঞ্চালনও এখানে থাকবে। এরই আলোকে তরুণ নেতারা দৌড়ঝাঁপ করছেন বেশি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি আগে ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট হলেও এবার গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ৮টি পদ বাড়িয়ে ৮১ করা হয়েছে। বৃদ্ধি পাওয়া পদগুলোর মধ্যে হচ্ছে সভাপতিমণ্ডলীর ৪টি, সম্পাদকমণ্ডলী ২টি (১টি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ১টি সাংগঠনিক সম্পাদক) এবং ২টি সদস্য। দু’দিনব্যাপী ২০তম জাতীয় সম্মেলনের শেষদিনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২১ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।
সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা টানা অষ্টমবারের মতো পুনর্র্নিবাচিত হন। প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। ওই দিন সভাপতিমণ্ডলীর ১৪ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। তাদের মধ্যে ৭ জন বিদায়ী কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। প্রথম দিনে চারটি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনটিতে পুরনোরাই বহাল আছেন। তারা হলেন- মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি ও জাহাঙ্গীর কবির নানক। নতুন করে যুক্ত হন বিদায়ী কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুর রহমান। কোষাধ্যক্ষ পদে আগের এইচএন আশিকুর রহমানই বহাল রয়েছেন। এমজমিন
২৮ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি