বুধবার, ০২ নভেম্বর, ২০১৬, ০১:২৯:৩০

১০০ পদে হাজার হাজার বায়োডাটা জমা

১০০ পদে হাজার হাজার বায়োডাটা জমা

রফিকুল ইসলাম রনি : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা হতে না হতেই উপকমিটির সহসম্পাদকের পদ পেতে সাবেক ছাত্রনেতাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। বড় বড় নেতাদের কাছে ধরনা দেওয়াসহ গ্রুপিং-লবিংয়ে তারা পিছিয়ে নেই কেউ কারও থেকে।

আলালের ঘরের দুলাল থেকে শুরু করে পেশাজীবী, সহযোগী সংগঠনের নেতা এবং ছাত্রলীগ থেকে সদ্য বিদায়ী নেতাদের এখন মূল লক্ষ্য সহসম্পাদকের পদ। দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে মাত্র ১০০ সহসম্পাদকের পদ থাকলেও পদ প্রত্যাশী প্রায় পাঁচ হাজার বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় পদ না পাওয়ায় শেষ ভরসা হিসেবে সহসম্পাদক পদের জন্য নেতাদের বাড়ির ড্রইংরুম এবং কার্যালয়ে তাদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণেরও সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন তারা।

গত দুই দিন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়, কেন্দ্রীয় নেতাদের কার্যালয় ও বাসা-বাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, নেতাদের বাসার সামনের রাস্তা, কার্যালয়ে বাইরে, ড্রইংরুম ও সভাকক্ষে উপস্থিতির অধিকাংশই উপকমিটির সহসম্পাদক পদ প্রত্যাশী। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নেতাদের পেছনে ছুটছেন তারা। দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে জমা দিচ্ছেন জীবনবৃত্তান্ত। তবে পদপ্রত্যাশীদের ভিড় থাকলেও এবার এ পদে মনোনয়ন দিতে কিছুটা সময় লাগবে বলে দলীয় নীতি নির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলীয় কর্মকাণ্ডে তেমন ভূমিকা না রাখলেও অতীতে এ পদের নাম ভাঙিয়ে নিজেকে শক্তিমান হিসেবে পরিচিত করতে দেখা গেছে অনেক নেতাকে। আগের কমিটিতে গঠনতন্ত্র অমান্য করে ঢালাওভাবে শত শত সহসম্পাদক পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে দলীয় নেতাদের মুখেই রসালো কথাবার্তা শোনা গেছে। এবার নির্ধারিত পদের বাইরে অতিরিক্ত কাউকে না দেওয়ার দলীয় নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। গত ২৬ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর প্রথম সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়।

দলের গঠনতন্ত্রের ২৫ অনুচ্ছেদের ‘চ’ ধারা অনুযায়ী ১৯টি উপকমিটিতে অনূর্ধ্ব পাঁচজন করে সর্বোচ্চ ৯৫ জন সহসম্পাদক মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ আছে। তবে দলের বড় বড় নেতারা বলছেন, সর্বোচ্চ ১০০ সহসম্পাদক নেওয়া হতে পারে এবার। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেছেন, এবার সহসম্পাদকের তালিকা হবে ১০০-এর মধ্যে। মেধাবী ছাত্রনেতা ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তিধারীদের এই পদে নেওয়া হবে।

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদকের তালিকা দিতে কিছুটা দেরি হবে। কারণ এখনো কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকটি পদ ফাঁকা রয়েছে। তাছাড়া নেত্রী এখন নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পদ প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা পদে আসতে চান, তারা তো জীবনবৃত্তান্ত জমা দিচ্ছেনই।

দলীয় একটি সূত্র জানায়, অতীতের মতো লবিং আর তদবির করে এবার উপকমিটির সহসম্পাদক পদ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। দলের প্রতি অনুগত, বিগত আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা এবং সাধারণ মানুষের কাছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে— এমন ত্যাগী নেতাদের এ পদে নেওয়ার চিন্তাভাবনা আছে। এক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে সাবেক ছাত্রনেতাদের। আগের কমিটিতে এ পদ নিয়ে যারা নানা অপরাধ করেছেন, তদবির বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজি করেছেন, তাদের এবার বাদ দেওয়া হতে পারে।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, গত কমিটিতে গণহারে সহসম্পাদক পদ দেওয়ায় দলীয় সভানেত্রী বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। তখন দুজন কেন্দ্রীয় নেতা এ পদ বণ্টন করেছিলেন। তাই এবার কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে তিনি নিজেই যাচাই-বাছাই করে নির্ধারণ করবেন কাদের এ পদে নেওয়া যায়।  বিডি প্রতিদিন

০২ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে