শুক্রবার, ০৯ অক্টোবর, ২০১৫, ০৬:২৮:৩৮

দলীয় প্রতীকে পৌরসভা-ইউপি নির্বাচন, পারবে না জামায়াত

 দলীয় প্রতীকে পৌরসভা-ইউপি নির্বাচন, পারবে না জামায়াত

নিউজ ডেস্ক : স্থানীয় সরকারের সব স্তরের (ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন) প্রতিনিধি নির্বাচন হবে দলীয়ভাবে।  কেবল নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এসব নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারবে।  পাশাপাশি মোট ভোটারের এক শতাংশের সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া যাবে।  দলীয় মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না।  

নিবন্ধন বাতিলের কারণে আগামী ডিসেম্বর ও মার্চে অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।  পাশাপাশি সংশোধিত আইনেও দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়া দলের প্রতীকে কেউ অংশ নিতে পারবে না; এমন বিধান থাকছে বলে জানিয়েছে ইসি।
 
জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহৃত রাজনৈতিক দলের প্রতীকেই নির্বাচন হবে।  দলীয় মনোনয়ন কীভাবে চূড়ান্ত করা হবে তা আইনের অধীনে তৈরি বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে। র তবে জেলা পরিষদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পদ্ধতি ঠিক রেখে দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়নের বিধান রাখা হচ্ছে। বর্তমান আইনে জেলার অধিক্ষেত্রে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ও সংরক্ষিত প্রতিনিধিদের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচনের বিধান রয়েছে।
 
গতকাল স্থানীয় সরকার, পল্ল­ী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক নির্দেশনায় আইন সংশোধনের কাজ চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়েছে। আগামী সোমবার মন্ত্রিসভা সংশোধিত আইন অনুমোদন করলে প্রয়োজনে অধ্যাদেশ আকারে তা কার্যকর করা হবে। কারণ পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বেশি সময় হাতে নেই। আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকেই দলীয় প্রতীকে নির্বাচন যাতে হতে পারে সেজন্য দ্রুততার সঙ্গে কাজ চলছে।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেক অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন দলীয়ভাবে করতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ), স্থানীয় সরকার (পৌরসভা), স্থানীয় সরকার  (উপজেলা পরিষদ), স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) ও স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী যুক্ত করে সংশোধিত আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়েছে। বিদ্যমান আইনে সরাসরি দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে এবং দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচনের সুযোগ নেই। তবে প্রতীক ব্যবহার না করলেও অনানুষ্ঠানিক ঘোষণায় দলীয়ভাবে প্রার্থী ঠিক ও নির্বাচন হয়ে থাকে।
 
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন পদ্ধতি ভালো বিষয়। তবে এর আগে স্থানীয় সরকার কাঠামোর পরিবর্তন দরকার। কারণ বর্তমান কাঠামোয় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো মেয়র বা চেয়ারম্যাননির্ভর। প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন। এটি না করে দলীয়ভাবে নির্বাচন করলে মেয়র ও চেয়ারম্যানদের হাতই শক্তিশালী হবে। এতে স্থানীয় সরকারের শত্তিশালী করার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।
 
ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচন: ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ২৪৫ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দেশে পৌরসভা রয়েছে ৩২৪টি। এর মধ্যে নির্বাচন উপযোগী রয়েছে ২৮৫টি। তবে সীমানা জটিলতার কারণে এই মুহূর্তে ২৬টিতে নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না। বাকি পৌরসভায় সীমানা নির্ধারণের কাজ চলছে। আর কয়েকটিতে সম্প্রতি নির্বাচন হয়েছে। এর আগে ১২ জানুয়ারি ২০১১ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব পৌরসভায় নির্বাচন হয়েছিল। এসব পৌরসভায় প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে। সেই হিসাব অনুযায়ী পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান রয়েছে।
 
ইউপি নির্বাচন: সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন কয়েকটি ধাপে করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ২০১১ সালের মার্চে শুরু হয়ে জুনের মধ্যে সম্পন্ন হয় ৪ হাজার ৫০১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে উপকূলীয় অঞ্চলের ১২টি জেলার ৫৬৮টি ইউনিয়ন পরিষদে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাকিগুলো জুনের মধ্যে সম্পন্ন করে ইসি।
 
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ২৯ ধারার উপ-ধারা (৩)-এ বলা আছে, পরিষদ গঠনের জন্য কোনো সাধারণ নির্বাচন ঐ পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ থেকে ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের (৬ মাস পূর্বে) মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। অতএব ২০১১ সালের মার্চে যেসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেগুলো এ বছরের অক্টোবরের পর নির্বাচন উপযোগী হবে। আর বাকি ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন ২০১৬ সালের জানুয়ারি  থেকে।
 
প্রথম ১৯৭৩ সালে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৭৭, ১৯৮৩, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৩ এবং সর্বশেষ ২০১১ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবার প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে  নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

* আগামী নির্বাচন থেকেই কার্যকর, প্রয়োজনে অধ্যাদেশ :স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
 
* দলীয় মনোনয়ন না পেলে প্রার্থী হওয়া যাবে না
 
* এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী
 
* নিবন্ধিত দলই কেবল অংশ নিতে পারবে
 
* ডিসেম্বরে পৌরসভা ও মার্চে ইউপি নির্বাচন
তথ্যসূত্র : ইত্তেফাক
৯ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে