শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৬:৫৪:০০

এখনো বেঁচে আছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী

এখনো বেঁচে আছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন কমিশন বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাব নিয়ে ভাবতেই চায়না আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, তারা আন্দোলনের নামে এত এত মানুষকে মেরে খুন করেছে। সেই বিএনপির প্রস্তাব নিয়ে আবার ভাবার কি আছে? তাদের উচিত আগে দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া, তারপর নিজেদের প্রস্তাব নিয়ে কথা বলা।

আজ শনিবার গণভবনে হাঙ্গেরি সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, বিভিন্ন টক শোতে অনেকেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখতে পান। আপনি পান কি না? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আর মধ্য নেই, মধ্য পার হয়ে গেছে। আমরা তিন বছর পার করছি। মধ্যবর্তী যদি বলেও থাকেন, সেটা পরবর্তীর বিষয়ে বলেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্বপ্ন দেখা ভালো।’

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচন কমিশন আমরা করিনি, সার্চ কমিটি থেকেই করেছেন। তার প্রস্তাবের মাথা ও লেজের কোনো নাগাল কেউ পেয়েছেন কিনা জানিনা। তাকে তো কোনো প্রশ্নও করতে পারেননি সাংবাদিকরা।

প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন, তিনি ৯২ দিন অফিসে বসে থাকলেন। কেউ তাকে সরাতে পারলো না। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারলেন। তার প্রস্তাব তিনি রাষ্ট্রপতিকে বলুন, রাষ্ট্রপতি বুঝবেন। রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত নিবেন।

অতীত প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার ছেলে মারা গেলো আমি বাড়িতে গেলাম, মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলেন। গাড়ি তো ঢুকতেই দিলো না, গাড়ি থেকে নামলাম ছোট গেট দিয়ে যেতে চাইলাম সেটাও বন্ধ করে দিলো। ভেতরে দেখছি মানুষ চলাচল করছে।

তিনি আরো বলেন, দুশমনদের সঙ্গেও তো এমন আচরণ করা হয়না।  খুনির সঙ্গে কিসের আলোচনা। নির্বাচন কমিশন আছে নির্বাচন হচ্ছে। তারা একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো, আরেকটাতে করলো না। সিটি কর্পোরেশনে অংশ নিবে, আবার জেলা পরিষদে অংশ নিবেনা।  যে নির্বাচনে জিতে যাচ্ছে সেটা নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন তুলছে না।  যার নিজের সিদ্ধান্তের ঠিক নেই, তার কাছে দেশ কি আশা করে।

অতীত টেনে প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে নিয়ে বলেন, ৭২ এর পর থেকে সব পার্টি মানে খুনিদের নিয়েও তিনি আলোচনা করতে চান। তাহলেই তো তার মনোভাব বোঝা যায়। রাজাকাররাই ছিলো তার কেবিনেট কলিগ। তার কাছে প্রত্যাশা কিসের? তার প্রস্তাব নিয়ে এত ভাবার কি আছে?

গণমাধ্যমকর্মীদের নানা প্রশ্নের। প্রাসঙ্গিকভাবেই হাঙ্গেরি সফরের সময় তাকে বহনকারী বিমানের যান্ত্রিক গোলযোগের বিষয়টিও উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল, বিমানে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি নিছকই দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনো কিছু?

কবিতায় উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর জবাব, ‘জীবন–মৃত্যু পায়ের ভৃত্য, বুঝেছে দুর্বৃত্ত।’ তিনি বলেন, এটা একটা যান্ত্রিক দুর্যোগ ছিল। দুর্ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনো বেঁচে আছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যে দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, সপরিবারে হত্যা করা হয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয় না, মন্ত্রী করা হয়, সেখানে আর কী বলব?’

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য নতুন বিমান কেনার বিষয়টিও নাকচ করে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির জন্য নতুন বিমান কেনার মতো বিলাসিতা করার সময় আসেনি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গরিবের ঘোড়ারোগ বলা হয় না! ঘোড়া পালতেও অনেক খরচ, সেটা আমরা চাই না। সাধারণ মানুষ যেটাতে চড়ে, আমরাও সেটাতেই চড়ব।’

নির্দিষ্ট কারও জন‌্য নয়, যাত্রীদের জন‌্যই বিমানকে আধুনিকায়নের গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিমানের উন্নয়নে তাঁর সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরেন।
৩ ডিসেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে