শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৪২:১৯

দোসররা সবকিছু লণ্ডভণ্ড করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে: রিজভী

দোসররা সবকিছু লণ্ডভণ্ড করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে: রিজভী

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ভেতরে-বাইরেসহ সকল পর্যায় থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। 

রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান, এই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে প্রতিটি উদ্যোগকে সফল করে তোলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসররা সবকিছু লণ্ডভণ্ড করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে ছদ্মবেশে। তাদের পালিয়ে যাওয়া গডমাদার হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত ১৬ বছর অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের শিকড় অনেক গভীর পর্যন্ত গ্রোথিত হয়েছে। প্রত্যেকটা সরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের নিচের স্তর থেকে একেবারে উপরের স্তর পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর। তারা সুযোগ খুঁজছে ছোবল মারার।

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, এই দোসররা দিবাস্বপ্ন দেখছে তাদের প্রভু ভারত সরকার হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে, বাতিল হওয়া ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রোপাগান্ডা করে আবারও কিছু একটা করে ফেলতে পারে। কিন্তু সেই স্বপ্নের গুঁড়েবালি। সাত মণ ঘি পুড়বে না, আর রাধাও নাচবে না।

রিজভী বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশের জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বিএনপির বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকেও বিএনপি সম্পর্কে ভুল তথ্য সন্নিবেশিত করা হচ্ছে। আমরা রাজনীতি সচেতন দেশবাসীর সামনে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, বিএনপি সেনাছাউনিতে জন্ম হওয়া কোনো দল নয়। সামরিক প্রশাসক কিংবা সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে নয় বরং ঢাকার রমনা রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন তিনি ছিলেন দেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। সুতরাং বিএনপি সেনাছাউনিতে গঠিত হয়েছে এই তথ্য ইতিহাস বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয়।

তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতির সবকিছুতেই শেখ মুজিবময় মাফিয়া আওয়ামী সরকার। দেশের সকল পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃত করে পাতায় পাতায় স্থান দেওয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের গুণগান, শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনাসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লেখা গল্প-প্রবন্ধ ও ছবি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঠ্যবই থেকে দলীয় গুণগান বাদ দিয়ে সংশোধন ও পরিমার্জন করার উদ্যোগ নিলেও হাসিনার দোসররা তাদের অশুভ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মত্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগ আজ একটি গণহত্যাকারী, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিত। তারা মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়েছে এবং ১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার হরণ করেছে।

 রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। তারা এখনো বাজার সিন্ডিকেট দমন করতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা মানুষ। প্রতিদিনের সংসারের ব্যয় মেটাতে জনগণকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এর মধ্যে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। তাতে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরেক দফা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। 

তিনি বলেন, জনজীবনের নিত্যদুর্ভোগ কিংবা বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে অন্তর্বর্তী সরকার যদি শুধু সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে, তাহলে জনগণের কাছে সংস্কার আগে না সংসার প্রশ্নটিই মুখ্য হয়ে উঠতে পারে। দুর্ভোগ মেনে নিলেও জনগণ এখনো সরকারের বিরুদ্ধে তেমন উচ্চবাচ্য করছে না। কারণ জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল দেখতে চায়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার নিজেরা নিজেদের সফল দেখতে চায় কিনা সেটি তাদের প্রমাণ করতে হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে