নিউজ ডেস্ক : মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও ভারতীয় সেনাদের অবদান কখনও ভোলার নয়। এ দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে ভারতীয় সেনারা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন বলে স্মরণ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সেনাদের অবদান স্বীকার করে মুক্তিযোদ্ধারা বলেছেন, ভারতীয় সেনাদের রক্তের সঙ্গে আমাদের রক্ত মিশে একাকার হয়ে গেছে। রক্তের বিনিময়ে যে বন্ধন তা এখন আরও মজবুত হয়েছে। আমরা কখনও তাদের আলাদা করে দেখি না। আলাদা করে দেখাও যাবে না। এ জন্যই ৪৫ বছর পর হলেও শহীদ ভারতীয় সেনাদের সম্মাননা প্রদানসহ স্বীস্কৃতি দেয়ার উদ্যোগ ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজরিত সোহরাওয়ার্দীউদ্যানে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সোনাদের স্মরনে নির্মিত স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
একাত্তরের এইদিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধী বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন। সভা শেষে মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক ২২ টি সংগঠন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্মুতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাবেক সেনা প্রধান কে এম শফিউল্লাহ (বীরউত্তম) এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আজ ৬ ডিসেম্বর। এই দিনে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অনেক ভারতীয় সৈনিক নিহত হয়েছিলেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভিতরে বিজয় স্তম্ভে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এম.পি ও সংগঠনের সহ সভাপতি মোবারক আলী শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দ পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও ভারতীয় সেনাদের অবদান কখনও ভুলবো না। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় সেনাদের সম্মাননা জানাতে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিগগিরই ভারতে যাবেন সেনাদের প্রতি সম্মাননা জানাতে।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনারা আমাদের সঙ্গে থেকে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে ভারতীয় সেনারা তাঁদের বুকের তাঁজা রক্ত দিয়েছেন। জীবন দিয়েছেন। ভারতীয় সেনাদের রক্তের সঙ্গে আমাদের রক্ত মিশে একাকার হয়ে গেছে। রক্তের বিনিময়ে যে বন্ধন তা এখন আরও মজবুত হয়েছে। আমরা কখনও তাদের আলাদা করে দেখিনা। আলাদা করে দেখাও যাবে না।
মন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত এলাকায় ৩ একর জায়গার মধ্যে ভারতীয় সেনাদের সম্মানা জানাতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যেই এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। আধুনিক ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পূর্ণ স্মৃতিসৌধটি ঘিরে তৈরি হবে আরও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। যেখানে ১৬৬৮ জন শহীদ ভারতীয় সেনাদের নাম লেখা থাকবে।
সাবেক সেনাপ্রধান কে.এম শফিউল্লাহ বীর উত্তম, মেজর জেনারেল হেলাল মোর্শেদ বীর প্রতীক, ড. নীম চন্দ্র ভৌমিক, শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, রেদুয়ান খন্দকার ও ফেরদৌস খান আলমগীরসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, চেতনায় ৭১ হৃদয়ে বাংলাদেশ, জাতীয় হিন্দু মৈত্রী পরিষদ ও আওয়ামী সমর্থক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
৬ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর