সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৫, ০৩:০০:৫৭

এ মাসে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম

এ মাসে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম

নিউজ ডেস্ক : বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিনক্ষণ এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। এ মাসে তাঁর ফেরার সম্ভাবনা নেই বলে লন্ডন ও ঢাকায় দলীয় একাধিক সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে।

তবে দলের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২১ অক্টোবর তাঁর দেশে ফেরার সম্ভাব্য তারিখ রয়েছে। এর আগে বলা হয়েছিল, ১৬ অক্টোবর তিনি দেশে ফিরতে পারেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডনে যাওয়ার আগেও দিনক্ষণ নিয়ে এমন ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল।

খালেদা জিয়ার দেশে ফিরতে দেরি হওয়া, দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য, বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক আলোচনা—এসব মিলিয়ে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও একধরনের প্রশ্ন ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন কি না বা তাঁর ফেরার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। অবশ্য সরকার ও বিরোধী দলের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে এর কোনো সত্যতা মেলেনি।

তবে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হচ্ছে না, কবে নাগাদ খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন। দলটির নেতারাও সুনির্দিষ্ট তারিখ বলতে পারছেন না। তবে দলের একাধিক সূত্র প্রতিবেদককে জানিয়েছে, ২১ অক্টোবর সম্ভাব্য তারিখ থাকলেও সেদিন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম। তিনি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফিরতে পারেন। তাঁরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ওই সব সূত্রের মতে, ইতিমধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন লন্ডনে হাঁটুর সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখিয়েছেন। তিনি আবারও এ বিষয়ে ডাক্তারের কাছে যাবেন।

লন্ডন বিএনপির একটি সূত্র জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার একটি চোখে অস্ত্রোপচার হয়। একটি চোখে অস্ত্রোপচারের সপ্তাহ খানেকের মাথায় আরেকটি চোখে অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল রোববার পর্যন্ত তা হয়নি। খালেদা জিয়া এ চোখের অস্ত্রোপচার এখন না-ও করতে পারেন।

তবে দেশে ফেরার আগে যুক্তরাজ্য বিএনপি খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে একটি সভা করতে চায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সভার তারিখ চূড়ান্ত হয়নি।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, চেয়ারপারসনের দেশে ফেরার সঠিক তারিখ তিনি জানেন না। তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। সেখানে পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর সময় কাটাচ্ছেন। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ওই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের দেশে ফেরা বা না ফেরার কোনো যোগসূত্র নেই।

খালেদা জিয়া কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন জানতে চাইলে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন প্রতিবেদককে বলেন, চিকিৎসার জন্য সেখানে যাওয়ায় দেশে ফেরার দিনক্ষণ তাঁর জানা নেই।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পৌঁছান বিএনপির চেয়ারপারসন। এর মধ্যে দেশে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দুই হত্যার জন্য খালেদা জিয়াকে দায়ী করে গত শনিবার বলেছেন, তিনি এখন বিদেশে বসে বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছেন।

আসাদুজ্জামান রিপন প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এ ধরনের বক্তব্য আপত্তিকর। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের এমন বক্তব্য তদন্তে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। খালেদা জিয়ার দেশে ফিরতে দেরি হওয়ার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, এমন কোনো প্রশ্নই ওঠে না। খালেদা জিয়ার দেশে না ফেরার জন্য সরকারের কোনো তৎপরতা আছে বলে মনে করেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি তা মনে করছেন না।

তবে সরকারি দলের একাধিক নেতা প্রতিবেদককে বলেন, খালেদা জিয়া আদালতে তাঁর মামলার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতেই দেশে ফিরতে চাইছেন না। বিদেশে অবস্থান করে দেশে তিনি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করতে চান। তবে এ মুহূর্তে তাঁর দেশে না থাকাটা রাজনৈতিকভাবে স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের কেউ কেউ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ এই প্রতিবেদককে বলেন, বিএনপির নেত্রী দেশে কবে ফিরবেন, কেন দেরি করছেন—এটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে তিনি মনে করেন, দুজন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার আইনি প্রক্রিয়া চলছে। এ অবস্থায় তাঁদের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিএনপির নেত্রীর দেশে থাকাই উচিত ছিল। যেকোনো দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিপদ ও সংকটের সময় পাশে থাকেন—এটাই স্বাভাবিক।-প্রথমআলো
১২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে