রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৪:১৯:০৮

‘মা ভাবতেই পারেননি, আমি জীবিত ফিরে আসবো’

‘মা ভাবতেই পারেননি, আমি জীবিত ফিরে আসবো’

নিউজ ডেস্ক : মা ভাবতেই পারেননি, আমি জীবিত ফিরে আসবো। দেশ স্বাধীন করে যখন বাড়ি ফিরে আসি, মা-বাবা আমাকে দেখে বুকে জরিয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক।

যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফেরার পর সেদিনের স্মৃতিচারণ করে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বর্তমান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, মা’র সে কান্না আর থামে না। জিজ্ঞেস করি তুমি এতো কাঁদো কেন ? এর উত্তরে মা বলেন-তুই সেটা বুঝবি না। এটা খুশির কান্না।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক মহান বিজয় দিবসের স্মৃতিচারণ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে তার কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে আজ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মা আরো বলেন- ‘আমার ছেলে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে এবং সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে এসেছে, এটা যে একজন মা’য়ের জন্য কতটা গর্বের ও আনন্দের সেটা তোকে বলে বুঝানো যাবে না। আল্লাহ’র দরবারে এ জন্য হাজারো শুকরিয়া। ’

মোজাম্মেল হক বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আত্মসমপর্ণের কথা যখন প্রথম শুনি, তখন যে আত্মতৃপ্তি ও সন্তুষ্টি লাভ করেছি, বাকি জীবনে আর কখনোই, কোন প্রাপ্তিতে এতটা তৃপ্তি বা সন্তুষ্টি লাভ করিনি।

তিনি বলেন, জেনারেল নিয়াজীর আত্মসমপর্ণের কথা শোনার পর আমি ও আমার দলের সবাই আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া জানাই। খুশিতে আমাদের চোখ পানি এসে যায়। আমরা সবাই স্বাধীন বাংলাদেশের জমিনে চুমু খাই, আনন্দে নিজেদের মধ্যে কোলাকুলি করি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা এই মন্ত্রী জানান, পাকিস্তান আত্মসমপর্ণ করতে পারে এটা শুনে আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকালে আমাদের দল ঢাকামুখী হয়। এ সময় গাজীপুর ৬ দনা এলাকায় মালেকের বাড়ির সামনে পৌঁছলে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আক্রমণ করে বসে। সেখানে আমাদের ফোর্সের সাথে পাকিস্তান বাহিনীর তুমুল লড়াই হয়।

পাক বাহনীর সাথে তার গ্রুপের যোদ্ধাদের লাড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সম্মুখ যুদ্ধে আমাদের ফোর্সের সাথে মিত্রবাহিনীও ছিল। তুমুল লড়াই শেষে মিত্রবাহিনীরই জয় হয়। ওই লড়াইয়ে তারা ২শ’র অধিক পাকিস্তানী সৈন্য হত্যা করেছিল। পরে ট্রাক নিয়ে তার দল ঢাকা অভিমুখে রওনা দেয়।

মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সর্বপ্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জাহান জেবের বিরুদ্ধেও সম্মুখে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
১১ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে