মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:৩৬:৫৮

সুর পাল্টালেন সেই ঐশি

সুর পাল্টালেন সেই ঐশি

ঢাকা : পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায় অস্বীকার করে সুর পাল্টালেন তাদের মেয়ে ঐশি রহমান।  

মঙ্গলবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেয়া বক্তব্যে ঐশি বলেন, পুলিশ নির্যাতন ও ভয় দেখিয়ে বাবা-মাকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করেছিল।  ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন তিনি।  তার বাবা-মা যখন খুন হন তখন তিনি বাসায় ছিলেন না।  

ঐশি বলেন, বন্ধুর বাসায় হুইস্কি খেয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলাম।  তার বাবা- মাকে কে বা কারা খুন করে তাও তিনি জানেন না।

আত্মপক্ষ সমর্থনের পর ২০ অক্টোবর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বাবা-মাকে খুনের মামলায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করে ঐশি।  ক্রসফায়ারের ভয়ে তিনি জবানবন্দি দিয়েছিলেন বলে আবেদনে জানান।  ওই আবেদন আদালত নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।

ঐশি আদালতে দেয়া প্রত্যাহার আবেদনে বলেন, তাকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে বলা হয়, তাদের কথামতো ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কথা না বললে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অথবা ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হবে।  নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এবং মৃত্যুর ভয়ে জবানবন্দি দিয়েছিলাম।  ওই জবানবন্দি সত্য নয়।

বাবা-মাকে হত্যার ঘটনায় মেয়ে ঐশি রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৯ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান ওরফে জনি ও মিজানুর রহমান ওরফে রনি এবং গৃহকর্মী সুমি আকতার।

এরপর ওই বছরের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত।  
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঐশি একাই মা-বাবাকে হত্যা করেন।  এর আগে ঐশি তার মা-বাবাকে ৬০টি ঘুমের বড়ি মেশানো কফি খাইয়েছিলেন।

রাসায়নিক পরীক্ষায় ঘুমের ওষুধে নাইট্রাস, টেনিন ও ট্রমাজিপাম-৩-এর প্রমাণ মিলেছে।  এ ছাড়া মা স্বপ্না রহমানের ব্রোঞ্জের রক্তমাখা চুড়ি ও ঐশির রক্তমাখা কাপড়ের রক্তের সঙ্গে ঐশির রক্তের মিল পাওয়া গেছে।

গৃহকর্মী সুমিও এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। অভিযোগপত্রে ৫৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর পরদিন মেয়ে ঐশি গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন।  ওই বছরের ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে ঐশি জবানবন্দি প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করে ৫ সেপ্টেম্বর ওই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেন ঐশির আইনজীবীরা।
১৩ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে