বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:০৮:০৮

অবস্থান বদলাতে পারে বিএনপি

অবস্থান বদলাতে পারে বিএনপি

নিউজ ডেস্ক : স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সিদ্ধান্তে বিরোধিতা করলেও শেষ পর্যন্ত অবস্থান বদলাতে পারে বিএনপি।  দলীয় প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে পারে দলটি।  আবার কৌশলেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।  দল-সমর্থিত একক 'স্বতন্ত্র প্রার্থী' দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে দলটি।  

কোনোভাবেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে খালি মাঠে গোল দেয়ার কোনো সুযোগ দেবে না।  বিএনপির একাধিক সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গছে।

গতকাল সোমবার অবশ্য তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতারা বলেছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত নিজেদের নেতাদের জিতিয়ে আনা।  স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠানে পাঁচ প্রতিষ্ঠানের আইন সংশোধনে মন্ত্রিসভার অনুমোদনকে 'সাংঘর্ষিক' বলে দাবি করেছে।  

বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, সরকারের এমন সিদ্ধান্তে তারা বিস্মিত হয়েছেন।  সরকার ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার হীন চেষ্টা করছে।  স্থানীয় সরকার-সংক্রান্ত নির্বাচনী আইন অধ্যাদেশ জারি করা থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক সূত্র জানিয়েছে, দলীয়ভাবে হোক আর স্বতন্ত্রভাবে হোক, নির্বাচনী মাঠে থাকবে বিএনপি।  দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আর ভুল করবে না দলটি।  ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দল-সমর্থিত প্রার্থী দিয়েছিল বিএনপি।  দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেও রাজপথে নেমে প্রচার চালিয়েছেন। আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয়ভাবে অথবা 'স্বতন্ত্র প্রার্থী' দিয়ে ভোটযুদ্ধে নামবেন বিএনপি নেতারা।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে ২০-দলীয় জোটের প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয় হবে।  আর ভোট কারচুপি হলে আবারো প্রমাণ হবে বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।  তাতে আন্দোলনের নতুন ইস্যু তৈরি করতে পারবেন তারা।

সূত্র জানায়, আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে অংশ নেবে বিএনপি।  নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রয়োজনে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন, কেন্দ্রীয়ভাবে টিম গঠন, জনপ্রিয় প্রার্থী জরিপ করার প্রস্তুতি নেবে দলটি।  তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে এবং গোপন মাঠ জরিপের মাধ্যমে যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাকেই দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে।

সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে দলের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গতকাল সোমবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।  

সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন দলীয় পরিচয়ে অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রিপন বলেন, সরকারের এ ধরনের চিন্তাভাবনা আঁচ করতে পেরে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছিল।  একইসঙ্গে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব মহলের সঙ্গে আলোচনার কথা বলা হয়েছিল।  কিন্তু সরকার তা না শুনে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দিয়েছে।

রিপন বলেন, জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে এমপিরা স্বপদে বহাল থাকতে পারেন।  কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ হলে স্থানীয় সরকারে প্রশাসক নিয়োগের যে বিধান রাখা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনে তা-ও সাংঘর্ষিক।  স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকার যে কথা সংবিধানে রয়েছে, সে ধারাও ক্ষুণ্ন হবে।  এ অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর যেসব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের সময় হয়নি, সেসব প্রতিষ্ঠানে আগে নির্বাচিত মেয়র, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরদের পদে থাকার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, মানুষ যখন দ্রুত একটি জাতীয় নির্বাচনের দাবি করছে, ঠিক তখন এটাকে পাশ কাটিয়ে দলীয় পরিচয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনে সরকারের দূরভিসন্ধি রয়েছে বলে মনে করে বিএনপি।
১৩ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে