সোমবার, ০৯ জানুয়ারী, ২০১৭, ১২:৪৫:৪৩

খেলতে গিয়ে আদনান আর ঘরে ফিরেনি

খেলতে গিয়ে আদনান আর ঘরে ফিরেনি

নিউজ ডেস্ক : প্রতিদিনের মতো বিকালে খেলতে গিয়েছিল স্কুলছাত্র আদনান। কেউ ভাবতে পারেননি এ যাওয়াই তার শেষ যাওয়া। সুস্থ, সবল ছেলেটি আর ফিরেনি। নিষ্পাপ চেহারার শান্ত, ভদ্র এই কিশোরই টার্গেটে পরিণত হয় প্রতিপক্ষের। নৃশংস হামলা চালানো হয় তার উপর। আশপাশের লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচাতে পারেননি।

গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে কিশোর ছেলেটির লাশ গ্রহণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা। আদনানের মামা জিয়াউল হক বলেন, আমরা খুব হতভাগা। যে বাচ্চাকে কোলে-পিঠে করে বড় করেছি। এখন মাত্র ১৪ বছরের এই ছেলের লাশ গ্রহণ করতে হচ্ছে আমাদের।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হকিস্টিকের আঘাতে নিহত হয় আদনান কবির (১৫)। সে উত্তরার ট্রাস্ট স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, উত্তরার ওই এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে কিশোর-তরুণদের মধ্যে গ্রুপিং ছিল। খেলাধুলা নিয়ে গ্রুপিংয়ের সূত্রপাত। গ্রুপিং ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আদনানকে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যার পর উত্তরা পশ্চিম থানার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কের পাশে খেলার মাঠে আদনানের ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ।

আদনানের চাচা রফিকুল ইসলাম জানান, বিকালে র‌্যাকেট হাতে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিল আদনান। বাসার পাশে খেলার মাঠেই তার উপর হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, খেলার মাঠে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় বড়রা দৌড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু আদনান পালাতে পারেনি। তাকে ইচ্ছেমতো পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। স্বজনরা জানান, অত্যন্ত শান্ত ও নম্র ছিল আদনান। এই ছেলেকে কেউ হত্যা করতে পারে তা ভাবতে পারেন না তারা।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন খান বলেন, প্রতিপক্ষের হকিস্টিকের আঘাতে ওই কিশোর গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লুবানা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীন বলেন, মামলা করার পরপরই আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালায় পুলিশ। শনিবার সকালে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হচ্ছে, রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সাদাফ জাকির ও নাফিজ মোহাম্মদ আলম। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। আদনান উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে মা-বাবার সঙ্গে থাকতো। ব্যবসায়ী কবির হোসেন ও কাওসার বেগমের তিন ছেলের মধ্যে আদনান ছিল মেজ। তার বড় ভাই দশম শ্রেণি আর ছোট ভাইটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এমজমিন
৯ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে