নিউজ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদসহ বরখাস্ত তিন কর্মকর্তাকে কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। দণ্ডিত হওয়ায় তাদের ডিভিশন বা বিশেষ সুবিধা বাতিল করে পরানো হয়েছে কয়েদির সাদা-কালো পোশাক। এখন থেকে সাধারণ বন্দির মতোই খাবার জুটবে তাদের। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য আসামিদেরও কনডেম সেলে রাখা হবে।
কারা অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিধি অনুযায়ী দণ্ডিত হওয়ার পর আর ডিভিশন কার্যকর থাকে না। তাই তাদের এখন সাধারণ ফাঁসির আসামি হিসেবেই বিবেচনা করা হবে। চাঞ্চল্যকর মামলার আসামি হওয়ায় তাদের প্রতি বাড়তি নজরদারিও থাকবে।
কারা সূত্র জানায়, সাত খুন মামলার আসামিদের মধ্যে লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন গাজীপুরের কাশিমপুর-২ এবং মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার মাসুদ রানা কাশিমপুর-১ কারাগারে আছেন। তাদের মধ্যে র্যাব থেকে বরখাস্ত হওয়া তিন শীর্ষ কর্মকর্তা এতদিন ডিভিশন পেয়ে আসছিলেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছাতে দেরি হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে সোমবার থেকেই তাদের আলাদা সেলে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রাখা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ২৩ আসামির মধ্যে বাকিরা রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে। এর মধ্যে যাদের ফাঁসির রায় হয়েছে, তাদের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর আসামী নূর হোসেন এবং র্যাবের সাবেক তিনজন কর্মকর্তাকে স্বাভাবিক থাকতে দেখা গেছে। তবে রায় ঘোষণার পরপরই কয়েকজন কান্নায় ভেঙে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সকাল দশটার পর এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রায় ঘোষণা শেষ হয়ে যায়। এই মামলায় মোট আসামী ৩৫ জন। তাদের মধ্যে যে ২৩ জন আটক রয়েছেন। তাদের সকলকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে সকাল সাড়ে ন'টার মধ্যে নিয়ে আসা হয় আদালতে।
তবে প্রধান চারজন আসামী সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাবের চাকরিচ্যুত তিনজন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ রানাকে আদালতে আনা হয় রায় ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে। তাদেরকেও ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আনা হয়েছিলো কিন্তু আদালতে ঢোকার সময় তাদের ডাণ্ডাবেরি খুলে দেওয়া হয়। নূর হোসেনকে আনা হয় মাথায় হেলমেট পরিয়ে।
আদালতে বিচারকের আসনের বাম পাশে তৈরি লোহার বিশাল একটি খাঁচায় নূর হোসেনসহ বেশিরভাগ আসামীকে রাখা হলেও র্যাবের সাবেক তিনজন কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছিলো খাঁচার বাইরে। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ২৬ জনের মধ্যে ১৬ জনই পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাবের সদস্য ছিলেন। বাকি দশজনের মধ্যে রয়েছেন নূর হোসেন এবং তার সহযোগীরা।
মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের একজন স্থানীয় নেতা ছিলেন। সাত খুনের ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। মেজর তারেক সাঈদ মোহাম্মদ বর্তমান সরকারের একজন মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর জামাতা।
১৬ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস