বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ০১:২৪:১৯

রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচরে স্থানান্তরের বিষয়ে যা বলল এইচআরডব্লিউ

রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচরে স্থানান্তরের বিষয়ে যা বলল এইচআরডব্লিউ

নিউজ ডেস্ক : রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঠেঙ্গারচরে পাঠানোর পরিকল্পনা অবিলম্বে বাতিল করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বুধবার সংগঠনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে ঠেঙ্গারচরকে অনুন্নত ও বসবাসের অনুপযোগী হিসেবে উল্লেখ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংগঠনটির অভিযোগ, রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে কক্সবাজার থেকে ঠেঙ্গারচরে নিয়ে যাওয়ার মানে হলো মুক্তভাবে চলাফেরা, জীবনমান, খাদ্য ও শিক্ষার অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা।

রোহিঙ্গাদের ঠেঙ্গারচরে স্থানান্তর করা হলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আওতায় বাংলাদেশের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তার লঙ্ঘন হবে বলেও সতর্ক করেছে এইচআরডব্লিউ।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ১৯৯০-এর দশক থেকে মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা ৩ থেকে ৫ লাখ। এরমধ্যে বেশির ভাগই নিবন্ধিত নন। কেবল গত বছরের অক্টোবর থেকেই প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে ঠেঙ্গারচরে স্থানান্তর করা নিয়ে সরকার হাস্যকর কথা বলছে। যে দ্বীপটিতে একেবারেই সুযোগ সুবিধা নেই, যেটি উঁচু ঢেউয়ে প্লাবিত হয় এবং বর্ষা মৌসুমে তা পানিতে নিমজ্জিত থাকে সেখানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে তাদের জীবন মানের উন্নয়ন হবে বলে দাবি করা হচ্ছে। এ প্রস্তাবটি একইসঙ্গে নিষ্ঠুর ও অকার্যকরী এবং এটি বাতিল করা উচিত।’

২০১৫ সালে জনশূন্য ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার প্রথম প্রস্তাব উঠেছিল। সেই সময় থেকেই এর বিরুদ্ধে মানবাধিকারকর্মীদের সমালোচনার মুখে পদক্ষেপটি তখন বাস্তবায়ন হয়নি।সম্প্রতি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ঘোষণা করেছেন, মানবিক কারণে দেশে ফেরার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কক্সবাজারে অবস্থানরত ও নিবন্ধিত মিয়ানমারের নাগরিকদের নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গারচরে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর চরম নির্যাতনের শিকার এমন রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। এ ব্যাপারে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথাও সাংবাদিকদের জানান তিনি।

মানচিত্র অনুযায়ী,নোয়াখালী জেলা সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার, উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচর উপজেলা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার, হাতিয়া উপজেলা থেকে ২৫ কিলোমিটার এবং দ্বীপ উপজেলার পশ্চিম উপকূল হতে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত ঠেঙ্গারচর প্রায়ই প্লাবিত হয় জোয়ারভাটায়। এই ঠেঙ্গারচরের দৈর্ঘ্য ৮ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৪.৫ কিলোমিটার (প্রায় ১০ হাজার একর)।
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে