রুদ্র মিজান : গোয়েন্দাদের তদন্তের সূত্র এখন ফোনের কললিস্ট ও সেই কালো গাড়ি। কূটনৈতিক জোন গুলশানে চাঞ্চল্যকর রাণী হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রাণীর স্বজন ও প্রতিবেশীদের। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করেই রাণীকে হত্যা করা হতে পারে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার রাতে একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাসা থেকে বের হন রাণী। তারপর কুড়িল কালাচাঁদপুর এলাকায় ছিলেন বেশ কিছু সময়। পরে গুলশান-২ এলাকায় ছিলো তার অবস্থান। ধারণা করা হচ্ছে, কালাচাঁদপুর এলাকায় কোনো বন্ধু বা পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সঙ্গীসহ গুলশান এলাকায় যান। সেখানে দীর্ঘ সময় ছিলো তার অবস্থান। রাণীর মোবাইলফোনের নেটওয়ার্ক থেকে তার অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাসা থেকে সিএনজি অটোরিকশায় বের হলেও পরবর্তীতে ওই অটোরিকশায় তিনি ছিলেন নাকি কোনো গাড়িতে উঠেছিলেন বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে কুড়িল এলাকার কয়েক অটোরিকশাচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ডিবি’র তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। গুলশান-২ এর ৩৮ নম্বর সড়কের যে স্থান থেকে রাণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সিসি টিভির ফুটেজে ওই স্থানের আশপাশে তাকে দেখা গেছে রাত ১২টার পর বেশ কিছু সময় পায়চারি করতে। ওই সময়ে কালো রঙের একটি গাড়ি তার সামনে থামে। গাড়ির আরোহী দুই যুবকের সঙ্গে কথা হয় তার। গোয়েন্দারা জানান, ওই গাড়িটি সেখানে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছিলো। কালো রঙের ওই গাড়িটি এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। গাড়িটি খুঁজতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কখন কিভাবে রাণীকে গুলি করা হয়েছে সেই দৃশ্য সিসি টিভির ফুটেজে নেই। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সিসি ক্যামেরার আওতার বাইরে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো পুরুষের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছিলো। যে কারণে তাকে গুলি করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের আগে কালাচাঁদপুর ও গুলশানে কার সঙ্গে ছিলেন রাণী। এ বিষয়টি জানা গেলেই হত্যার ক্লু উদঘাটন সহজ হবে।
রাণীর বান্ধবীদের দেয়া তথ্যমতে, ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে রাণীর ফোনে একটি কল এসেছিলো। ওই কল পেয়েই বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন তিনি। কললিস্ট অনুসারে ওই কলসহ ঘটনার দিনে তার ফোনের প্রতিটি কল ও কলারদের নিয়ে তদন্তে নেমেছেন গোয়েন্দারা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে। সূত্রমতে, জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করেই এগুচ্ছে তদন্ত।
এ বিষয়ে ডিবি’র সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফুজুল আলম রাসেল বলেন, কললিস্ট ও সিসিটিভির ফুটেজকে কেন্দ্র করেই তদন্ত এগুচ্ছে। কালো গাড়িটির সন্ধান করা হচ্ছে। হত্যার আগে রাণী ওই গাড়িতে ছিলেন কি-না বা গাড়ি থেকে গুলি করা হয়েছে কি-না- এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও হত্যাকারীকে খুঁজে বের করতে কুড়িল-গুলশান এলাকায় গোয়েন্দারা নানাভাবে কাজ করছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এমজমিন
১৫ ফেব্রুয়ারি,২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসবি