বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল, ২০১৭, ০৩:১৪:৪৫

স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে রাজনীতি না করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে আমি কোনো রাজনীতি করি না। আসলে সেবার বিষয় নিয়ে কারো রাজনীতি করা উচিত নয়। আশা করি স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। আমরা তো মানুষের জন্যই রাজনীতি করি।

গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠান আয়োজিত ন্যাশনাল লো বার্থ ওয়েট সার্ভে-২০১৫ অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠী বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, নারী ও শিশুদের জন্য উন্নততর ও সহজলভ্য সেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশে একটি কার্যকর এবং গ্রহণযোগ্য সেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার ৫শ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে জনগণ স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে বমি বমি ভাব হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অসুস্থ হওয়ার গুজবেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

সার্ভে বলা হয়, দেশে সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক যুগে এই সংখ্যা ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ৩৪ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সার্ভে প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০০৩-০৪ সালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। কিন্তু ২০১৫-১৬ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

একই সময়ে স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ৯৬ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে ৬২ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে দেশে জন্মগত কম ওজনের শিশুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

২০০৩-০৪ সালের সার্ভেতে কম ওজনের নবজাতকের সংখ্যা ছিল ৩৬ শতাংশ। এক যুগে তা হ্রাস পেয়ে ২২ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর বাণিজ্যিক মানসিকতার কারণেই সিজারের মাধ্যমে শিশুজন্মের হার বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে তিনি মায়েদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সিজারে হয়তো মায়ের কষ্ট কম হয়। কিন্তু এই প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান জন্মদানে মায়েদের উত্সাহিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচএন) পরিচালক ডা. মুজাহারুল ইসলাম প্রমুখ।

‘বাংলাদেশে গড়ে ৪ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক বিষণ্নতায় ভুগছে’

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০১৭ উপলক্ষে গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপের বরাত দিয়ে বলেন, পৃথিবীতে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বিষণ্নতায় ভুগছে।

দেশভেদে শতকরা ৩ থেকে ১৭ জন মানুষ বিষণ্নতায় আক্রান্ত। বাংলাদেশের প্রাপ্ত বয়স্ক জনগোষ্ঠীর শতকরা ৪ দশমিক ৬ ভাগ বিষণ্নতায় আক্রান্ত।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এম,জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে