নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যে ২২টি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, তার কোনটিতে দেশ বিক্রি বা সার্বভৌমত্ব বিক্রির কথা আছে, সমালোচনাকারীদের তা দেখাতে হবে বলে হুঁশিয়ার দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রোববার মুজিবনগর সরকার দিবস উপলক্ষে বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এই দাবি জানান।
এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তিস্তাসহ অভিন্ন পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এই বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলেও জানান তিনি।কিন্তু যারা সমালোচনা করে এসব বলছে, এই প্রশ্নের জবাব তাদের দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের জনগণের আবেগ-অনুভূতিকে সম্মান করে বর্তমান ক্ষমতাসীন দু’দেশের সরকারের সময়ের মধ্যেই তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। জনগণের অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে ভারত যতদ্রুত সম্ভব এ চুক্তি সম্পাদন করবে ততই দু’দেশের জন্য মঙ্গল হবে। এতে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত হবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা পাকিস্তানের কাছে বিবেক বিক্রি করেছে তারাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে দেশ বিক্রি করা হয়েছে বলবে। বিএনপির এসব আবোল তাবোল বক্তব্য দেশবাসী এখন আর বিশ্বাস করেনা।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি ভারত বিরোধীতা করে সেদেশের কাছ থেকে কোন কিছুই অর্জন করতে পারেনি। কারণ শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে ভালো কোন কিছু অর্জন করা যায় না। তাই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে ভারতের কাছ থেকে সব কিছু অর্জন করবে বর্তমান সরকার।
বিএনপির উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে যে ২২ টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছেন সেগুলো ভালভাবে পড়ুন। এ সকল চুক্তিতে গোপন কিছু নয়। সংবাদপত্রেও ভালোভাবে প্রকাশিত হয়েছে। সারা দেশের মানুষ পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে সব কিছু জানতে পেরেছে। এখানে লুকোচুরির কিছু নেই।
তিনি বলেন, এ চুক্তিগুলো আপনারা লাইন বাই লাইন পড়ুন। তারপর যুক্তি সহকারে বলুন কিভাবে দেশ বিক্রি হয়েছে, দেশ বিক্রির দলিলপত্র দেখাতে হবে। আর তা প্রমাণ করতে না পারলে বিএনপি নেত্রী ও নেতাদের জনগণের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর সীমান্ত চুক্তিকে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দেশ বিরোধী চুক্তি হিসেবে অভিহিত করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪১ বছর পর সে চুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর বিএনপি-জামায়াত ফেনী থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে বলে প্রচার চালিয়েছিল। কিন্তু তাদের এ অপপ্রচার হিসেবে দেশের মানুষের কাছে প্রমান হয়েছে।
সকল প্রটোকল ভেঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানোয় নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ সম্মান শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়, এ সম্মান পুরো জাতির।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পংকজ এমপি’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি।
০৯ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস