মাহমুদ আজহার : রাষ্ট্রপতি পদে নিজের ইস্তফা দেওয়া নিয়ে মুখ খুললেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সম্প্রতি রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসভবনে একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের আলোচিত এই রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, তিনি বুঝতে পারছিলেন যে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তখন বুঝতে পারেননি যে তার আশপাশে, বঙ্গভবনেই এমন লোক রয়েছেন যিনি বা যারা ছিলেন ষড়যন্ত্রীদের ইনফরমার। পদত্যাগের পর সেই ইনফরমাররাই তার কাছে এসে নানা নাটক করেন। কান্নাকাটি করে পায়ে ধরে সালামও করেন। তখন খুব হাসি পেয়েছিল তার।
খোলামেলা আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারটা আমাকে মাঝেমধ্যে কষ্ট দেয়। কিন্তু তার চেয়ে বেশি হাসির খোরাক হয়েছে। সেই লোকটি এখনো সমাজে চলাফেরা করেন। কিন্তু সরকারি জীবনে তিনি এখন খুব একটা ভালো অবস্থার মধ্যে নেই। মাঝেমধ্যে টিভি টকশোতেও তাকে দেখা যায়।’
বিখ্যাত চিকিৎসক এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদ অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তার বয়স ৮৭। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী বি চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে নানাবাড়িতে (প্রখ্যাত ‘মুন্সেফবাড়ী’) জন্মগ্রহণ করেন। সাবেক এই রাষ্ট্রপতির পিতা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মজিদপুর দয়হাটা গ্রামে। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। পরে যুক্তরাজ্যের তিনটি রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স লন্ডন, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে নির্বাচিত ফেলো-এফআরসিপি এবং বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফসিপিএস করেন।
রোগবিজ্ঞানে দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় অধ্যাপক তিনি। সফল পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তিনি জাতিসংঘে তিনবার বক্তৃতা দেন। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এই রাজনীতিবিদ বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন।
বি চৌধুরী সাবেক রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে রাজনীতিতে আসেন। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ক্যাবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পরে অবশ্য রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দেন। পরে তিনি ২০০৪ সালের ৮ মে ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি দলটির প্রেসিডেন্ট। বিডি প্রতিদিন
এমটিনিউজ/এসবি