সোমবার, ০৭ আগস্ট, ২০১৭, ০১:৩০:২৩

দুই ধরনের তরুনীরদের টার্গেট করতেন ভণ্ডপীর আহসান পিয়ার!

দুই ধরনের তরুনীরদের টার্গেট করতেন ভণ্ডপীর আহসান পিয়ার!

নিউজ ডেস্ক: যেসব তরুণীরা নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করতেন কিংবা পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন, সেসব তরুণীদেরই টার্গেট করতেন ভণ্ডপীর আহসান হাবীব পিয়ার। নিঃসঙ্গতার সুযোগ নিয়ে অথবা সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে তাদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতেন।

সেসব সম্পর্কের ভিডিও গোপনে ধারণ করে অন্তত শতাধিক তরুণীকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করেছেন তিনি। গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতারের পর দুইদিনের রিমান্ডে থেকে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে এমন আরো তথ্য দিয়েছেন তিনি।  

ইংরেজি ও আরবি ভাষায় পারদর্শী ভণ্ডপীর আহসান হাবিব পিয়ার তরুণীদের কাছে ছিল আকর্ষণীয় পুরুষ। কথার জাদুতে মুহূর্তেই তরুণীদের আকৃষ্ট করার অসম্ভব ক্ষমতা ছিল তার।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ‘নানা সমস্যা নিয়ে ছুটে আসা উঠতি বয়সী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার নারীদের কথার জাদুতে ফেলে এসব অপকর্ম চালাত সে। হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদিস পড়াশোনা শেষ করে গত তিন বছর ধরে সে এসব অপকর্ম করে আসছে। ’

রিমান্ডে ভণ্ডপীর পিয়ার জানিয়েছে, তার এ কাজে বেশ কয়েকজন সহযোগিতা করতো। সে যখন নারীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে, তারা তা ভিডিও করতো। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। এছাড়া ইসলাম প্রচারের কথা বিভিন্ন জনের কাছ টাকা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে সে।

গোয়েন্দাদের পিয়ার জানিয়েছে, বাসার পাশাপাশি উত্তরায় ঘণ্টা চুক্তিতে রুম ভাড়া নিয়ে সে এ কাজ করেছে। আর গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করে তার সহযোগীরা এবং ভিডিওগুলো পরবর্তীতে তার কম্পিউটার ও মোবাইলে সংরক্ষণ করা হয়।

তবে শুধু দেশের ভেতরের নারীরা যে তার দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন এমন নয়। প্রবাসী নারীদের কাছ থেকে কথার জাদুতে মুগ্ধ করে এবং ইসলাম প্রচারের দোহায় দিতে মোট অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সুন্দর চেহারা এবং ইসলামী জ্ঞানকে অপব্যবহার করে অসংখ্য মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে ভণ্ডপীর পিয়ার। বিভিন্ন অসহায় মানুষকে নামমাত্র সাহায্য করার ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করে নিজের ব্যাংক ও বিকাশ নম্বরে মোটা অংকের টাকাও আত্মসাৎ করেছেন তিনি। প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত তার ইসলামী ব্যাংকের একাউন্টের কথা সে আগে জানালেও নতুন করে জনতা ব্যাংকের আরেকটি একাউন্টের কথা জানা গেছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে সিটিটিসির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, ভণ্ডপীর পিয়ার অসংখ্য নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তার প্রতারণার আরেকটি মাধ্যম ছিলো এএইচপি নামের অনলাইন টেলিভিশন। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করে প্রতারণা করেছেন। দেশের প্রচলিত আইনের বাইরে টেলিভিশন চালানোর দায়ে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে পর্নো উৎপাদন ও সংরক্ষণ করার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে