নিউজ ডেস্ক : মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের চালানো হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন প্রাণের ভয়ে পালিয়ে আসা এক রোহিঙ্গা শরনার্থী।
আব্দুল হামিদ (৫৬) নামের ওই রোহিঙ্গা শনিবার রাত ১০টার দিকে উখিয়ার ঘুমধুম সীমান্তপথে ৮ জনের পরিবার নিয়ে এসেছেন। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী গ্রাম বলিবাজারে আব্দুল হামিদের বাড়ি।
তিনি জানান, সরকারি বাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা যেভাবে তাণ্ডব শুরু করেছে, তাতে আর বাড়িতে থাকতে পারলাম না।
শনিবারও তার প্রতিবেশি একটি পরিবারের সবাইকে গলাকেটে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যার দৃশ্য তিনি ও তার পরিবারের লোকজন লুকিয়ে থেকে দেখেছেন। ওই ঘটনার পর তার স্ত্রীকেও তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। এরপর তিনি পরিবার নিয়ে পালিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
আব্দুল হামিদ তার গ্রামের প্রায় ৪০ জনকে খুন হতে দেখেছেন। যাদেরকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর চেয়ে হিন্স্র বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা বেশি তাণ্ডব চালাচ্ছে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হত্যার পর লুটপাট করে ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
তিনি জানান, তার পাশের বরিক্যং গ্রামে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছেন।
আব্দুল হামিদ বলেন, আরাকানের দুর্গম এলাকার গ্রামগুলোতেও এখন হামলা, নির্যাতন, হত্যা, লুটপাট ও আগুন দেয়া হচ্ছে। এসব গ্রামের রোহিঙ্গারা এখন প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আসছেন।
উল্লেখ্য, গত দু সপ্তাহে রাখাইন প্রদেশে সহিংসতা শুরু হবার পর প্রায় তিন লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিম সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এ্যামনেস্টি ইন্টান্যাশনাল বলছে, তাদের কাছে এমন প্রমাণ আছে যে মিয়ানমার – বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ভূমি-মাইন পেতে রেখেছে।
এর আগে সপ্তাহে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষও এমন দাবি করেছিল। বলা হয়েছিল যে মিয়ানমার থেকে পলায়নরত রোহিঙ্গা মুসলিমরা যাতে আবার সেদেশে ফিরে যেতে না পারে – সে জন্যই সীমান্তে মাইন বসানো হয়েছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস