বৃহস্পতিবার, ০৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:০৫:৪৩

প্রস্তুত বিধিমালা; অপেক্ষা ভেটিংয়ের

প্রস্তুত বিধিমালা; অপেক্ষা ভেটিংয়ের

ঢাকা: দলভিত্তিক স্থানীয় সরকারের নির্বাচন (পৌরসভা) আইনের অধ্যাদেশ জারির পর এ সংক্রান্ত গেজেট হাতে পাওয়ার একদিনের মধ্যেই নির্বাচন বিধিমালা ও প্রার্থীদের আচরণবিধির খসড়া প্রস্তুত করে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার এটির প্রস্তুতি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে জানিয়েছেন ইসি সংশ্লিষ্টরা। মন্ত্রণলায় থেকে অনুমোদিত হয়ে এলেই স্বল্প সময়ের মধ্যেই বিধিমালা চূড়ান্ত করে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আগামী ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনযোগ্য ২৪৫ পৌরসভার ভোটগ্রহণের লক্ষ্য রয়েছে ইসির। রাজনৈতিক দলগুলোকে পৌর নির্বাচনে মনোনয়ন প্রদানের ক্ষমতা দিয়ে করা সংশোধিত এই বিধিমালায় দলের জন্য নির্বাচনী ব্যয়সীমা বেঁধে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক পৌরসভায় মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে যত প্রার্থীই দেয়া হোক না কেন সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ একলাখ টাকা ব্যয় করা যাবে। তবে একটি পৌরসভায় একজন প্রার্থী দেয়া হলেও এক লাখ টাকাই ব্যয় করতে পারবে দল। নির্বাচনী খরচ মেটাতে অনুদান গ্রহণের সীমাও বেঁধে দেয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ ২০ হাজারের বেশি অনুদানের চেক গ্রহণ করা যাবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট দলকে জরিমানা গুনতে হবে ৫ লাখ টাকা। নতুন বিধিমালায় সর্বোচ্চ ছাড় দেয়া হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে। ভোটার স্বাক্ষরযুক্ত তালিকার বিধানে পরিবর্তন এনে ভোটার সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। আগের নির্বাচিত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এই বিধানটি একেবারেই অকার্যকর করে দেয়া হয়েছে। ইসির যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলী এ বিষয়ে জানান, সংশোধনের প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতও নেয়া হবে। তাদের মতামত পর্যালোচনা করে শিগগিরই বিধিমালা চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। ইসির প্রস্তাবিত বিধিমালা থেকে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে দল একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন দেবে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর নির্দিষ্ট সময়ে প্রার্থী বা তার মনোনীত ব্যক্তি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চূড়ান্তভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে দলের একজন প্রার্থীই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আগে থেকেই দলের বাইরে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিতে হবে। প্রস্তাবিত বিধিমালার (ইইই) দফায় বলা হয়েছে- রাজনৈতিক দলের পক্ষে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদাধিকারী বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কার্যনির্বাহকের স্বাক্ষরিত এই মর্মে প্রত্যয়ন থাকতে হবে যে, প্রার্থীকে ওই দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে শর্ত থাকে যে, রাজনৈতিক দল মেয়র, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ও সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে প্রাথমিকভাবে একাধিক মনোনয়নপত্র প্রদান করতে পারবে। রাজনৈতিক দল ক্ষমতাপ্রাপ্ত কার্য নির্বাহকের নাম, পদবী ও নমুনা স্বাক্ষরসহ একটি চিঠি তফসিল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করবে এবং তার অনুলিপি নির্বাচন কমিশনেও দাখিল করতে হবে। যদি একই পদে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন প্রদান করা হয়ে থাকে তবে বিধি ১৭ এর ২ উপবিধি অনুযায়ী প্রত্যাহার করা যাবে। উপবিধি ২ এ বলা হয়েছে- বৈধভাবে মনোনীত কোনো প্রার্থী তদকর্তৃক স্বাক্ষর একটি লিখিত নোটিশ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন বা তার পূর্বে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে স্বয়ং বা লিখিত অনুমোদিত কোনো প্রতিনিধি মারফত দাখিল করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কোনো নোটিশ কোনো অবস্থাতেই প্রত্যাহার বা বাতিল করা যাবে না। এদিকে পূর্বে নির্বাচিত হওয়া প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে কিছু সুবিধা পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে বিধিমালার সংশোধনী প্রস্তাবে (ইইই) দফা সন্নিবেশ করে বলা হয়েছে-মেয়র বা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর বা সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ইতিপূর্বে নির্বাচিত হয়ে থাকলে তার জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ভোটারের স্বাক্ষর তালিকা সংযুক্ত করার প্রয়োজন হবে না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থীকে তার নির্বাচিত এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জুড়ে দিতে হয়। তবে সংশোধনীতে মেয়রের জন্য ৪০০ এবং কাউন্সিলরদের জন্য ৫০ জন ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা জুড়ে দেয়ার বিধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী বলেন, পৌরসভা নির্বাচনের বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। বুধবার তা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। সব কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে আগামী সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করা যেতে পারে। ইসি সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলতি বছরের ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পৌরসভা নির্বাচন হতে পারে বলেও জানান তিনি। -মানবকণ্ঠ/জেকে/এমআর ৫ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে