বৃহস্পতিবার, ০৫ নভেম্বর, ২০১৫, ১১:০২:২৪

বাংলাদেশের একটি এলাকায় মাটি খুঁড়লেই পাওয়া যাচ্ছে গুপ্তধন!

বাংলাদেশের  একটি এলাকায় মাটি খুঁড়লেই পাওয়া যাচ্ছে গুপ্তধন!

নওগাঁ : নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার পতিত বা আবাদি জমি যেখানের খোঁড়াখুড়ি করেন না কেন পেয়ে যাবেন গুপ্তধন।কথাটা শুনে অবাক হচ্ছেন? না, ঘটনা সত্যি, দীর্ঘ তিন বছর ধরেই মাটি খুঁড়লেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন গুপ্তধন। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। আর সেই আশায় এ এলাকার মানুষ প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আবাদি জমি কেউ বা আবার রোপণকৃত ধানের জমি খনন করেই চলছেন। আর পেয়ে যাচ্ছেন দামি সব গুপ্তধন। পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম রঘুনাথপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার পুনর্ভবা নদীর পূর্ব পাড়ের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে গুপ্তধন পাওয়ার এ প্রতিযোগিতা। কেউ নিজের জমিতে আবার কেউ অন্যের জমি টাকার বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক কিনে নিয়ে খনন করেই চলছেন। বছর পাঁচেক আগে পশ্চিম রঘুনাথপুর জেলেপাড়ার আবদুল কাদের বেশ কয়েকটি ছোট্ট পাথর পান। সেই পাথরের মধ্যে ছোট ছিদ্র ছিল। পাথরগুলো দেখতে তসবির মতো। যেগুলো মুসল্লিরা ইবাদতে কাজে লাগান। তিনি তখন তার গ্রামের মসজিদে আজান দিতেন। পাথরগুলো পাওয়ার পর কখনই চিন্তা করেননি যে সেগুলো মূল্যবান। তাই তিনি তাদের মসজিদে ইবাদতের কাজে লাগানোর জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথরগুলো দিয়ে তসবি তৈরি করেন এবং ইবাদত করেন। কয়েক মাস পর কোনো এক লোক ওই মসজিদে নামাজ পড়ে তসবিটি দেখে তার পছন্দ হয়েছে বলে বৃদ্ধ আবদুল কাদেরকে জানান। বৃদ্ধ দিতে না চাইলে সেটি তিনি কিনে নেয়ার প্রস্তাব দিলে তা ৫০০ টাকার বিনিময়ে ওই লোকের কাছে বিক্রি করেন। এরপর বৃদ্ধ কাদেরের মনে সন্দেহ হয় সেটি নিশ্চয়ই মূল্যবান পাথর। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার লোকজন শুরু করেন মাটি খনন। সেই থেকে প্রতিদিন সকাল হলেই স্থানীয়রা যে যার মতো কোদাল ও খুনতি দিয়ে মাটি খনন করেই চলছেন।আর পাচ্ছেন মূল্যবান সব জিনিসপত্র। প্রায় ৪ থেকে ৫ ফুট নিচে মাটি খনন করলেই পাওয়া যাচ্ছে পয়সা, তাবিজ, তসবিহ, কলম, মার্বেল, চাকি, ঢোল, জালি পোটল, বোতামসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। এসব জিনিস লাল, কালো, সাদা, সবুজসহ একেকটির রং একেক রকম।এসব মূল্যবান পাথরের জিনিস পাওয়া মাত্র বিক্রি করে দেন স্থানীয়রা। ওই গ্রামের মোজাম্মেল হক জানান, প্রায় তিন বছর আগে জানাজানি হয় আমাদের এলাকার মাটির নিচে অনেক গুপ্তধন রয়েছে। তবে বিষয়টি গোপন ছিল বলে অনেকেই জানতে পারেননি। মাটি খনন করার পর জিনিসগুলো তারা গোপনে নওগাঁ বা বগুড়ার ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন। ফইমুদ্দিনের স্ত্রী আনোয়ারা জানান, তার বাড়ির দক্ষিণ পাশে তাদের নিজের ৫ কাঠা জমি খনন করে ১টি চাকি পেয়েছেন। সেটি বিক্রি করেছেন ১ হাজার টাকায়। ঠোল পেয়েছিলেন ২টি যা বিক্রি করেছেন ৩০ হাজার টাকায়। আর জালি পোটল ২টি পেয়ে বিক্রি করেছেন ৬০ হাজার টাকায়। কয়েকটি মার্বেল ও বোতাম পেয়ে সেগুলো বিক্রি করেছেন ৫ হাজার টাকায়। সেখানকার জমি মালিকদের মধ্যে যাদের বাড়ি বাইরে বা দূরে তারা টাকার বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক জমি বিক্রি করছেন। আর কিনছেন স্থানীয়রা। হয়তো স্বাধীনতা বা তারও আগে এখানে কোনো সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারের বাস ছিল। তারা চলে যাওয়ার সময় তাদের ব্যবহার্য কোনো জিনিসই নিতে পারেননি। কালক্রমে তাদের বসতভিটা বা উপসনালয় মাটিতে দেবে যায়। আর আর সেই মূল্যবান জিনিসগুলো এখন বের হচ্ছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। ৫ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে