নিউজ ডেস্ক : মেয়েদের ব্যবহৃত কাপড়, মুজো কিংবা শরীরের বিশেষ অঙ্গ যেমন- পা, চুল ইত্যাদি দেখে খারাপ অনুভূতি জাগাকে ফেটিসিজম বলে। এই বছরেরই মে মাসে একটা খবর খুব হাইলাইট হয়েছিল। আমেরিকার অরিগনে অনেক মেয়ের বাসে চুল কাটা হচ্ছিল। পরে একজন লোককে হাতেনাতে ধরা হয়। জানা যায়, মেয়েদের চুল তাকে উত্তেজিত করে তুলত। সে এর আগেও পুলিশের হাতে ধরা পরেছিল।
তাছাড়া এবনরমাল কোন কিছু দেখে বা কাজ করার মাধ্যমেও অনেকে উত্তেজনা বোধ করে। এটাকে প্যারাফেলিয়া বলে। সেদিন এক লোক ধরা পরেছে, যে ঢাকার বাসে বাসে মেয়েদের ড্রেস কেটে দিত। কিন্তু তার এই কাজ করার পেছনের কারণ এখনো বের করা যায় নি। লোকটাকে যেহেতু আমি কাছে থেকে দেখেছি ও কথাও বলেছি, তাই অল্প বিস্তর তার সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়েছে। এটার পেছনে কয়েকটা সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।
►► বাসে মেয়েদের জামা কাটার কয়েকটা সম্ভাব্য কারণ : -
► প্রথমত, লোকটার কোন মানসিক সমস্যা যেমন- ফেটিসিজম বা প্যারাফেলিয়া থাকতে পারে। হয়তো সে মেয়েদের ড্রেসের কাটা অংশ নিয়ে গিয়ে যৌন তৃপ্তি পায়।
► ফেসবুকের মাধ্যমে অনেকগুলো কাটা ড্রেসের ছবি দেখে মনে হল বেশিরভাগ কাটা অংশ মেয়েদের কোমর বা নিতম্বের কাছাকাছি। এই বিশেষ জায়গার প্রতি লোকটির আকর্ষণ থাকতেও পারে।
► দ্বিতীয়ত, লোকটি সাথে করে কাটার নিয়ে ঘুরে। এর মানে হল সে নিয়মিত এই কাজ করে। অনেক সময় মানুষকে কষ্ট দিয়ে বা বিব্রত করে অনেকে মানসিকভাবে তৃপ্তি বোধ করে। এটা একটা মানসিক রোগ। এটাকে স্যাডিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার বলে। কোন মেয়ে যখন দেখবে তার পছন্দের পোশাক কেউ কেটে দিয়েছে, তখন স্বভাবতই সে মনে কষ্ট পাবে।
কিংবা রাস্তার মধ্যে টের পেলে সে বিব্রত বোধ করবে। লোকটি হয়তো এটাতেই তৃপ্তি পায়। আর কতজনকে কষ্ট দিয়েছে, সেটা হিসেব রাখতে জামার কাটা অংশ সাথে করে নিয়ে যায়। সেগুলো দেখে আর, হো হো করে হাসে।
► তৃতীয়ত, লোকটা পোশাক কেটে নিয়ে গিয়ে ব্ল্যাক ম্যাজিক করে। অনেকে হয়তো ব্ল্যাক ম্যাজিকে বিশ্বাস নাও করতে পারে। তবে বিশ্বাস করুন বা না করুন কিংবা এই ব্ল্যাক ম্যাজিক কাজ করুক বা না করুক, লোকে যে ব্ল্যাক ম্যাজিক করার চেষ্টা করে এই বিষয় সবাই জানে। মেয়েদের কাপড়, চুল কিংবা ব্যবহৃত পোশাকের কোন একটা অংশ ব্ল্যাক ম্যাজিকে অহরহ ব্যবহার করা হয়। এই পয়েন্টটা এখন বিস্তারিত লিখতে চাচ্ছি না।
► চতুর্থত, লোকটি কি একাই এই কাজ করছে, না আরো কয়েকজন এরকম কাজের সাথে জড়িত- এটা স্পষ্ট না। যদি একাধিক লোক যুক্ত থাকে, তবে এটা বিকৃত মানসিকতার কাজ নয়। এটার পেছনে বিশেষ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কোন কিছু চুরি বা পকেটমারা হচ্ছে না, শুধু ড্রেস কেটে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্যগুলো হতে পারেঃ - মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করা
- পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসকে বিপাকে ফেলা
- মেয়েদের বাসে চলাকে নিরুৎসাহিত করা
- কোন অসাধু পীর ফকিরের যাদুর কাজে তার সাগরেদ বা মুরিদদের সাহায্য করা ইত্যাদি। তাছাড়া ঘটনার যারা ভিক্টিম হচ্ছে, তাদের মাঝে আন্তঃ সম্পর্ক বা সম বৈশিষ্ট্য আছে কি না, সেটাও জানা দরকার। লোকটিকে আটকের পর এরকম ঘটনা আরো হচ্ছে কি না, এই ব্যাপারে চলমান সার্ভেইল্যান্স দরকার। তাহলে বুঝা যাবেএটা ইনডিভিজুয়াল কিংবা অর্গানাইজড গ্রুপ- কার কাজ। তবে, যা কিছুই হোক না কেন, আমরা চাই এই অপকর্ম যেন আর কখনো না হয়। এখানেই যেন শেষ হয়ে যায়। আমাদের মা' বোনেরা যেন নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে।
লেখক : Dr. Taraki Hasan Mehedi
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/এস