নিউজ ডেস্ক : পিলখানা হত্যা মামলার ১০ হাজার পৃষ্ঠার রায় পড়তে কয়েক দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। রবিবার রায়ের সার সংক্ষেপ পড়ার সময় আদালত একথা জানান।
রোববার সকাল ১০টা ৫৬ মিনিটে এ মামলার রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।
আদালত বলেন, ‘এই রায়ে প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠার বেশি অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দেবো। রায়টি সবমিলিয়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার বেশি। রায় পুরো পড়বো না। তবে পুরো পর্যবেক্ষণটি আমরা পড়ে শুনাবো। পূর্ণ পর্যবেক্ষণ শেষে আমরা সামারিলি জাজমেন্ট (সংক্ষিপ্ত রায়) দেবো। সেখানে রায়ের ফাউন্ডেশন (মূল ভিত্তি) অংশেকে কোন কারণে কী সাজা পেয়েছেন তা আমরা উল্লেখ করবো। এ কারণে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।’
মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে আদালত রায়ের বাকি অংশ পড়ার জন্য আগামীকাল সোমবার সকালে পুনরায় সময় নির্ধারণ করেন। কিন্তু আইনজীবীদের অনুরোধে আদালত আজ মধ্যাহ্ন বিরতির পর ফের রায় পড়া শুরু করেন। আদালত বলেন, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এত অল্প সময়ে ৫৭ জন সেনাকে হত্যার ঘটনা পৃথিবীর আর কোথাও ঘটেনি। এ হত্যাকাণ্ডে আমরা আমাদের সূর্য সন্তানদের হারিয়েছি।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘এ এক নৃশংস,বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড। এ মামলাটি পরিচালনার ক্ষেত্রে সমাজ বিজ্ঞানী,আইন বিজ্ঞানী ও সমাজ বিজ্ঞানীদের গবেষণা, অপরাধের ধরন, কারণ ও পবিত্র কোরআন শরিফের কিছু নির্দেশনাসহ বেশ কিছু ধর্মগ্রন্থের র্পযালোচনা করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
আদালত বলেন, ‘এই রায় ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী। ইতিহাসের জঘন্যতম ও বর্বরোচিত এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে অমানবিক নির্যাতন, অস্ত্র লুণ্ঠনের মতো ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার মাধ্যমে জনমনে ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। আমরা বারবার বিস্মিত হয়েছি এজন্য যে,বিডিআর একাত্তর সালে সীমান্ত রক্ষায় প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ইতিহাসের সেই ঐতিহাসিক অর্জনকে ভুলুণ্ঠিত করে দেশের আইনের শাসন বিনষ্ট করতে এক কলঙ্কের চিত্র বহন করতে হবে।’
এসময় আদালত সেনা হত্যার পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বলেন, একাত্তরে ৫৫ জন সেনা কর্মকর্তা পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিহত হন। আর বিডিআর বিদ্রোহে ৩০ ঘণ্টার মধ্যে ৫৭ সেনা নিহত হন।
আদালত বলেন, ‘শেখ হাসিনার নব গঠিত সরকারকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করতে এবং বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এই বিদ্রোহ ঘটানো হয়।’
এমটিনিউজ/এসএস