নিউজ ডেস্ক : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গিয়ে গত ১৩ বছরে মারা গেছেন ৩৩ হাজার ১১২ বাংলাদেশি শ্রমিক। ২০০৫ থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এসব শ্রমিকের মরদেহ দেশে ফিরেছে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন হাজার ১৫৪ জন অভিবাসী শ্রমিকের মরদেহ বাংলাদেশে এসেছে।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন (ওশি) এ তথ্য জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপারসন ড. এস এম মোর্শেদ। এতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ওশি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এ আর চৌধুরী রিপন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা গৃহকর্মী রহিমা বেগম এবং বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (বিএফটিইউসি) সেক্রেটারি পুলক রঞ্জন ধর।
সংবাদ সম্মেলনে এ আর চৌধুরী রিপন জানান, ১৯৭৬ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত এক কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ১৮১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অভিবাসীদের রেমিটেন্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও অভিবাসন প্রক্রিয়ায় তাদের পেশাগত নিরাপত্তার বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। ফলে শ্রমিকের মৃত্যু কমছে না।
তিনি বলেন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) বিদেশে যাবার আগে শ্রমিকদের যে ব্রিফিং দেয় সেখানেও পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে কিছু বলা হয় না। ফলে শ্রমিকরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সময় নিজেদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কেও অসচেতন থেকে যাচ্ছেন।
তিনি জানান, অভিবাসী শ্রমিকের মরদেহ দেশে আসার পর দাফনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মানবিক সহায়তা দেয়া হয়। এটি তাৎক্ষণিকভাবে শোকার্ত পরিবারের প্রতি সহানুভূতি হলেও কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যুর জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা গৌণ।
ওশির পক্ষ থেকে বিএমইটি প্রদত্ত প্রশিক্ষণ ও ব্রিফিংয়ে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা, বিদেশফেরত শ্রমিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুব্যবস্থা, বিদেশে বাংলাদেশের শ্রম উইংগুলোতে অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ হেল্পলাইন চালু করা এবং গন্তব্য দেশের সঙ্গে যৌথশ্রম পরিদর্শন এবং প্রতিবেদন তৈরির ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস