বুধবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ১০:২৬:৫২

কি সেই গোপন অভিমান? যার কারণে দুঃসময়ে খালেদার পাশে নেই জামায়াত

কি সেই গোপন অভিমান? যার কারণে দুঃসময়ে খালেদার পাশে নেই জামায়াত

নিউজ ডেস্ক : রাজনৈতিক জীবনের বড় দুঃসময়ে পতিত খালেদা জিয়ার পাশে নেই জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলাম। অভিমান করেই বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পাশে থাকছে না নিবন্ধন হারানো দলটি।

জামায়াতের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার জিয়া আরফানেজ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষিত হবে। তবে জোট নেত্রীর এমন রায়ের দিনেও মাঠে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত।

কারণ হিসাবে জামায়াতের একটি সূত্র বলেন, বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে যে মামলাটি হয়েছে তা আদালতেই মীমাংসা হোক। এটা জামায়াতের চাওয়া। এ নিয়ে রাজপথে তার পক্ষে এ মহুর্তে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। এটা তার ব্যক্তিগত ও বিএনপির ব্যাপার। এখানে জামায়াত নাক গলাতে যাবে না। জোটবদ্ধভাবে আন্দোলনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি।

এদিকে, জামায়াতের আরো একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন আদালতের রায়ে দণ্ডিত হবেন নাকি খাসাল পাবেন সেটা আদালত নির্ধারণ করবে। রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে ২০ দলীয় জোটের নেত্রীর পক্ষে জামায়াত মানসিক সমর্থন দিলেও তার জন্য রাজনীতির মাঠে নামতে নারাজ।

কেন মাঠে থাকবে না জামায়াত এমন প্রশ্নের জবাবে সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র উপ-নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি ২০ দলীয় জোট। এ নিয়ে বিএনপির ওপর অভিমান রয়েছে জামায়াতের। গোপন এ অভিমানের কথা বিএনপির অনেক নেতা জানলেও তা মিটানোর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

এছাড়া, আগামীকাল ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন শহররে বিএর্নপি নেতাকর্মীদের অপতৎপরতা ঠেকাতে সরকারের প্রশাসন বিশেষ করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী জোর প্রস্তুতি রয়েছে। যেকোনো ধরণের নাশকতা রোধ করতে সরকারর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলী ও যুব লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবেন বলেও জানা গেছে।

৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় বিপক্ষে গেলে মাঠে সক্রিয় থাকার ইস্যুতে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে বিএনপি জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর।

দলটির দায়িত্বশীলরা বলছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের একের পর ফাঁসির রায় এবং পরবর্তীতে রায় কার্যকরের সময় জামায়াত বিএনপি পাশে থাকবে দূরের কথা একটা বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি। তাই জামায়াতও এখন নীরব থেকে বিএনপির সেই নিষ্ক্রিয়তার জবাব দিতে চায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের মজলিসে শূরার এক সদস্য বলেন, বিএনপির দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য জামায়াত জোট করেনি। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের নির্বাচনী জোট। খালেদার মামলার বিষয়টি মোকাবিলা করবেন তাদের নেতা-কর্মীরা। তবে সরকার সাজানো মামলায় তাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির চেষ্টা করছে। এজন্য আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে জামায়াতের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলা ইস্যুকে পুঁজি করে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চায় জামায়াত। তারা এই পরিস্থিতিতে বিএনপিকে বোঝাতে চায় জামায়াত ছাড়া সরকারকে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া ২০-দলীয় জোটে বিএনপি প্রধান ও বড় দল হলেও জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি তাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

তাই খালেদা জিয়ার মামলা ইস্যুতে তাদের নেতা-কর্মীদের মাঠে না নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। যাতে সরকারের বিরুদ্ধে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিএনপির দুর্বলতা প্রমাণ হয়। তা ছাড়া তারা এ মুহূর্তে মাঠে নেমে নতুন করে মামলা-মোকদ্দমায় জড়াতে চায় না। খালেদার জন্য মাঠে নেমে নির্বাচনের আগে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি খোয়াতে চায় না জামায়াত।

তারা মনে করছে, এ ইস্যুতে নীরব থাকলে হয়তো সরকার তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড করতে দেবে। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার মামলার ইস্যুতে বিএনপিকে কড়া জবাব দিতে চায় জামায়াত। যুদ্ধাপরাধের মামলায় নেতাদের ফাঁসির রায় ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিকে মাঠেঘাটে চেয়েছিল তারা। কিন্তু পাশে পায়নি তাদের। এ ইস্যুতে একপর্যায়ে জোট ভাঙার উপক্রম হয়।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে