একই বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে তিন ভাই-বোন
জাকির হোসেন তমাল: ছুটিছাঁটায় মা-বাবার সঙ্গে দেখা হলেও প্রতিদিন ক্যাম্পাসে দেখা হয় তিন ভাই-বোনের। একই ভবনে ক্লাস করেন তাঁরা। দুজন পড়েন দর্শনে, অন্যজন সমাজবিজ্ঞানে। এই আপন ভাই-বোনের নাম হলো মনিরুজ্জামান, বেলাল ইসলাম ও মাসুদা আক্তার। তাঁরা সবাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী।
সবার আগে দর্শনে ভর্তি হয়েছিলেন মনির। তিনি পা রেখেছিলেন ২০০৯ সালে। চার বছর পর ভর্তি হন ছোট ভাই বেলাল। তিনি পড়ছেন সমাজবিজ্ঞানে। আর পরের বছর বোনটি ভর্তি হন দর্শনে। কেমন লাগে একত্রে পড়তে—এ প্রশ্নের জবাবে মনির হাসতে লাগলেন, ‘আমাদের ভালো লাগে, সত্যি বলছি। মা-বাবা অনেক দূরে গ্রামে থাকেন। কিন্তু প্রতিদিন ভাই-বোনের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর সে কষ্ট আর মনে পড়ে না। যেকোনো বিপদে, প্রয়োজনে তিনজন পরামর্শ করতে পারি। এমনও হয়, অবসরে আমরা একসঙ্গে ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসে বসে থাকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো অনুষ্ঠানে ছোট ভাইটাকে নিয়ে অনুষ্ঠান দেখি।’
ও বলাই হয়নি, তাঁদের ছোট ভাই রনি রাজশাহী শহরে থাকে। ক্লাস নাইনে পড়ে। এ পরিবারের দুজন বাদে আর সবাই মোটামুটি একসঙ্গে আছে। সবার বড় ভাই লিটন, পেশায় ব্যবসায়ী। আর ছোট বোন মাহামুদা আক্তার রংপুর সরকারি কলেজে ইতিহাসে অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। তাঁদের বাবাও ছেলেমেয়েদের এ সাফল্যে খুব খুশি। মাহতাব উদ্দিন বললেন, ‘চার ছেলেমেয়েকে পড়াতে হাজার বিশেক টাকা মাসে খরচ হয়। সে জন্য আমাকে খুব কষ্ট করতে হয় সত্যি। কিন্তু আমি আশা করি, ওরা লেখাপড়া শেষে দেশের কাজে লাগবে।’
তাঁদের গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে। আরো মজার ব্যাপার হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন ছাত্রছাত্রীর সবাই রংপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। মনির মেসে থেকে এবার মাস্টার্স দিচ্ছেন। বেলাল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে থাকেন। তিনি সেকেন্ড ইয়ারে পড়েন। রোকেয়া হলের ছাত্রী মাসুদা এবার ফার্স্ব ইয়ার ফাইনাল দিচ্ছেন।-কালের কণ্ঠ
২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪ডটকম/জুবায়ের রাসেল