সেই হিন্দু জোগেশ এখন কাচারী মসজিদের খাদেম
নিউজ ডেস্ক : পূর্ব নাম জোগেশ চন্দ্র মল্লিক এখন জাকির হোসেন, দিনাজপুরের কাচারী মসজিদ (পুলিশ কোর্টের দক্ষিণ মোড়ে অবস্থিত) এর খাদেম। বয়স ১১২ বছর। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন। অনেকটা ধনুকের মতো লম্বা আকৃতির এই মানুষটি লাঠিতে ভর দিয়ে খুব কষ্টে চলাফেরা করে। কানে কম শোনেন, মেরুদন্ড প্রতিটি হাড় বরাবর কালো কড়া দাগ।
হাড্ডিসার চেহারা, মুখ ভর্তি দাড়ি, মাথা তার ন্যাড়া। সে খাদেম হিসেবে মসজিদের খেদমত করেন। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা, ঝাড়– দেওয়া ও ঝাড়ামোছা এই তার কাজ। সারাদিন নামাজ ও বন্দেগীর ভিতর সময় পার করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি দিনাজপুরে আসেন।
পরিবার-পরিজন নিয়ে ভারতে যাবার জন্য। এই সময় সকলে ভারতের গেলেও তিনি দিনাজপুরে একাই থেকে যান। এখানে কাঠমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। জাকির হোসেনের পিতার নাম মৃত অধর চন্দ্র মল্লিক আর স্ত্রীর নাম শ্রীমতি জ্যোস্না বালা। এক ছেলে বিকাশ মল্লিক ও এক মেয়ে শ্রীমতি সীতা রাণী।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার স্বজনদের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার আত্মীয় স্বজনরা কেউ ভারতের আগাতলা আর কেউ কুমিল্লা ও ঠাকুরগাঁয়ে আছ্নে বলে তিনি শুনেছেন। তবে কারো সঙ্গে যোগাযোগ নেই। নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করেন তিনি।তার স্থায়ী বাড়ি ছিল কুমিল্লা জেলাল সিদ্ধেশ্বরী গ্রামে।
১৯৭২ সালে উক্ত মসজিদের ইমাম নোয়াখালির ক্বারী সাহেবের নিকট সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তখন থেকেই কাঠের কাজের পাশাপাশি তিনি মসজিদের খাদেম হিসেবে কাজ আরম্ভ করেন। তিনি লেখাপড়া জানেন না কিন্তু অনেক সূরা ও দোয়া মুখস্থ তার। অনেক দোয়া-দরুদ ক্বারী সাহেবের কাছে শিখেছেন। তিনি সরকারীভাবে প্রতি মাসে ভাতা পান আর মসজিদ থেকে যে বেতন পান তা খুব সামান্য। তা থেকে তার দুধ-পাউরুটি ও কলাসহ নরম, সহজপাচ্য খাবার হয়ে যায়। অবশ্য তিনি মসজিদ কমিটির সদস্যদের বাড়ি থেকে খাবার পান। মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি তার কোয়ার্টার।
২৮ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ