রবিবার, ০৩ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৩:৪২:১৬

নতুন ভোটার হলেন ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার

নতুন ভোটার হলেন ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার

নিউজ ডেস্ক : নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, সারাদেশে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এবার নতুন ভোটার হয়েছেন ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৭ জন। মোট বৃদ্ধির হার সাড়ে ৪ শতাংশ। সচিব বলেন, ২০১৪ সালের হালনাগাদ ভোটার তালিকার মতো এবারো পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার কম হয়েছে। তবে সামগ্রিক ভোটারে পুরুষ ও নারীর মধ্যে ব্যবধান কম। এমনকি ২০১৫ সালে নারী ভোটার বেড়েছে। শনিবার দুপুরে ইসির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে কমিশন সচিব এই তথ্য প্রকাশ করেন। এ সময় কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান, এনআইডির মহাপরিচালক ব্রি. জে. সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন, এনআইডির পরিচালক (অপারেশন) সৈয়দ মোহাম্মদ মূসা ও জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত ২৫ জুলাই ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়। সে সময়ে বলা হয়েছিল ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। দুই ধাপে এই কাজটি করা হয়েছে। প্রথমে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরে ১৮ বছরের নিচে অর্থাৎ যাদের বয়স ১৬ ও ১৭ বছর তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। এবার হালনাগাদে মোট ভোটার ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৭ জনের মধ্যে পুরুষ ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৯৫ জন ও নারী ২০ লাখ ৭০ হাজার ১৫২ জন। মোট বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশ। সচিব বলেন, বিদ্যমান ৯ কোটি ৬২ লাখ ২৬ হাজার ৫৪২ জন ভোটার রয়েছে। খসড়া তালিকার দাবি, আপত্তি ও সংশোধনের পর আগামী ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। তখন বিদ্যমান ভোটারের সঙ্গে নতুন অন্তর্ভুক্ত ভোটার যুক্ত হবে। তখন ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। সচিব বলেন, এবার হালনাগাদে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭১ জন মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে পুরুষ ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯৯ জন ও নারী ২ লাখ ৫০ হাজার ৭২ জন। অথচ বিগত ৩টি (২০১২, ১৩ ও ১৪) হালনাগাদে ছিল মাত্র ১২ লাখ। এবার বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার কারণে এ সংখ্যা বেড়েছে। হালনাগাদের শুরুতে সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোতে মৃত ভোটারের সংখ্যা খবুই কম ছিল। পরে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়রদের সঙ্গে বৈঠকের পর মৃত ভোটারের সংখ্যা বেড়েছে। তবে চৌকিদার ও দফাদারকে এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তবে তাদের গণনার সংখ্যা এখনো কমিশনের হাতে এসে পোঁছেনি। এটা পেলে মৃত ভোটারের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। খসড়া তালিকা ৩ কারণে প্রকাশ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটারযোগ্য হয়েও যারা নিদিষ্ট সময়ে অনুপস্থিত ছিলেন তারা ভোটার হওয়ার জন্য এখন আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া তালিকায় কোনো বহিরাগত বা রোহিঙ্গা ভোটার হয়ে থাকলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আপত্তি দেয়া যাবে এবং কারো ভোটারে নাম কিংবা তথ্যে ভুল থাকলে তা সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে। কমিশন থেকে নিয়োগ করা সংশ্লিষ্ট রিভাইজিং অর্থরিটির কাছে দাবি, আপত্তি ও সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে। রিভাইজিং অর্থরিটি কর্তৃপক্ষ হচ্ছে কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এসব ব্যক্তির কাছে আগামী ১৭ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্টরা আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া ২২ জানুয়ারির মধ্যে দরখাস্তসমূহের নিষ্পত্তি করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে তা সংশ্লিষ্টরা চূড়ান্ত করবেন। আর ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান কমিশন সচিব। এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, 'যেতে হবে বাড়ি বাড়ি বাদ যাবে না কোনো নারী' এ সেস্নাগানসহ নানামুখী উদ্যোগ নেয়ার কারণে নারী-পুরুষের মধ্যে ভোটারের ব্যবধান কমেছে। এর জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মীসহ কমিশন বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর ফলও পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫তে নারী ভোটার বেড়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কক্সবাজার ও বান্দরবানসহ ১৪টি এলাকাকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করা হয় যাতে একজনও রোহিঙ্গা তালিকায় নাম উঠাতে না পারেন। এর জন্য আমি নিজে (সচিব) এবং নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ আলী সংশ্লিষ্ট এলাকায় সফর করি। নানামুখী পদক্ষেপের কারণে তালিকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো গেছে। এর পরও খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছে। দু-একজন ভোটার হলে আপত্তি আসলে তথ্য যাচাই করে তার নাম বাদ দেয়া হবে।' ছিটমহলের বাসিন্দাদের ভোটার করা সংক্রান্ত এক প্রশ্নে সিরাজুল ইসলাম বলেন, সীমানা বিন্যাস চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের ভোটার করা সম্ভব হবে না। এই সীমানার কাজটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় করে থাকেন। এটি সম্পন্ন হলে ভোটার করা হবে ছিটের বাসিন্দাদের বলে জানান তিনি। যেসব এলাকায় খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি সেগুলো হলো সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন অফিস, উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস, রিভাইজিং অথরিটির কার্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/ওয়ার্ড অফিস/ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অথবা রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র ও জনগুরুত্বপূর্ণ যে কোনো স্থানে। -যায়যায়দিন ৩ জানুয়ারি,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে