আবারো খা'রাপের দিকে যাওয়ার মতো করোনা পরিস্থি'তি। এমন অব'স্থায় কী করা যায় তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে সরকারকে। আর এদিকে বিভিন্ন স্থানে দিনমজুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে শাটডাউন নিয়ে আ'লোচনা চলছে। এটা এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। লকডাউন শব্দটি এবং এর প্রয়োগ সম্পর্কে ধারণা থাকলেও শাটডাউন সম্পর্কে কারো ধারণা না থাকায় এত আলোচনা।
শাটডাউন শব্দের অর্থ বন্ধ। করোনাভাইরাসের ঊ'র্ধ্বমুখী সং'ক্রমণ ও মৃ'ত্যু ঠে'কাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দুই সপ্তাহের শাটডাউন শুরু হলে দেশের সবকিছু বন্ধ থাকবে নাকি অন্য কোনো উপায়ে নিয়ন্ত্রিত হবে, সবার মনে এখন সেই প্রশ্ন।
পরামর্শক কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ২৩ জুন কমিটির বৈঠককালে ক'রোনাভাইরাসের সং'ক্রমণ ও মৃ'ত্যু প্র'তিরো'ধে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সারাদেশে ‘কারফিউ’ জারি করার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। তবে গতকাল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের শাটডাউনের পরামর্শ করা হয়।
বি'জ্ঞ'প্তিতে বলা হয়েছে, সার্বিক দিক বিবেচনা করে করোনার সং'ক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ও জনগণের জীবনের ঝুঁ'কি ঠে'কাতে কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন শাটডাউনের সুপারিশ করছে। এ সময়ে জ'রুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা ক'ঠোরভাবে পালন করতে না পারলে, আমাদের যতই প্র'স্তুত থাকুক না কেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতু'ল হয়ে পড়বে।
কমিটির আরেক সদস্য বলেন, লকডাউন শব্দটি এখন হে'লাফে'লার হয়ে গেছে। লকডাউনের মধ্যেও গণপরিবহন চলছে, মার্কেট শপিংমলসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। এ কারণে তারা ‘কারফিউ’ শব্দটি প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারফিউ হোক আর শাটডাউন হোক, সারাদেশে আগামী ১৪ দিনের জন্য যানবাহন ও মানুষের চলাচল ক'ঠোর'ভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে প'রিস্থি'তির ভ'য়ংকর হয়ে উঠতে পারে। এমনকি চিকিৎসাসেবা ব'ন্ধের উপক্র'মও হতে পারে হাসপাতালে।
করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির শাটডাউনের সুপারিশ প্র'সঙ্গে গতকাল জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘ক'মিটির সু'পারিশ গু'রুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। সং'ক্রমণ যেহেতু বে'ড়ে যাচ্ছে, আমরা বিভিন্নভাবে তা ক'মানোর চেষ্টা করছি। স্থানীয়ভাবে বি'ধিনিষে'ধ দিচ্ছি, দিয়ে এটাকে কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করার চেষ্টা করছি। পরি'স্থিতি বিবেচনা করে যেটা প্রয়োজন হবে সেটাই আমরা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু সং'ক্রমণটা ঊ'র্ধ্বমুখী, দৈনিক সং'ক্রমণ ৬ হাজার ছা'ড়িয়ে গেছে। সরকার প'রিস্থি'তি খুব গ'ভীরভাবে প'র্যবেক্ষণ করছে। প'রিস্থি'তি অনুযায়ী সি'দ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে যেটি উপ'যুক্ত হবে, সেই সি'দ্ধান্তই আমরা নেব।’
সরকার কতদিন প'রিস্থিতি পর্য'বেক্ষণ করবে—জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গ'ভীরভাবে পরি'স্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পরি'স্থিতি বিবেচনা করে যেকোনো সময় যেকোনো সি'দ্ধান্ত নেয়া হবে।’
কী সি'দ্ধান্ত নেয়া হতে পারে—এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আগে আমাদের সং'ক্রমণ ৭ হাজার ছা'ড়িয়ে গিয়েছিল। এখনো অনেক জায়গা আছে যেখানে সং'ক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে। আমরা চাইছি...ইতোমধ্যে ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতে ক'ঠোর বি'ধিনিষি'ধে দিয়েছি। তারপরও ঢাকার মধ্যে লোকজন এসে যাচ্ছে। এই যোগাযোগগুলো...। ইতোমধ্যে বাস, ট্রেন, যাত্রীবাহী নৌযান ব'ন্ধ করা হয়েছে। প'র্যবেক্ষণ করেই কিন্তু আমরা এ সি'দ্ধান্তগুলো নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সং'ক্রমণ ক'মাতে প'দক্ষেপ নিতে আমাদের বিশে'ষজ্ঞ টিম কাজ করছে। সেই অনুযায়ী যে সি'দ্ধান্ত নেয়া উপযু'ক্ত এবং সঠি'ক হবে, সেটা আমরা নেব।’
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রা'ন্ত হয়ে স'র্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৮১ জনের মৃ'ত্যু হয়েছে। এ নিয়ে প্রাণঘা'তী এ ভাইরাসে আ'ক্রান্ত হয়ে দেশে মৃ'ত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ হাজার ৮৬৮ জনে।
একই সময়ে করোনা রোগী শনা'ক্ত হয়েছে আরও ছয় হাজার ৫৮ জনের। এ নিয়ে দেশে আ'ক্রান্তের সংখ্যা বে'ড়ে আট লাখ ৭২ হাজার ৯৩৫ জনে দাঁ'ড়াল। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পা'ঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞ'প্তিতে এসব ত'থ্য জানানো হয়।