বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৯:৪৫:৫৭

ঢাবি ছাত্রীর যৌ'ন হয়রানির অভিযো'গ তারই সহপাঠীর বিরুদ্ধে

ঢাবি ছাত্রীর যৌ'ন হয়রানির অভিযো'গ তারই সহপাঠীর বিরুদ্ধে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী তারই এক সহপাঠীর িবরুদ্ধে যৌ'ন হয়রানির অভি'যোগ তুললেন। দুই জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), প্রক্টর ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছে এই বিষয় লিখিত অভিযো'গ করেছেন ওই ছাত্রী। এরপর বিষয়টি জানতে তাদের দু'জনকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডে'কেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর।

লিখিত অভি'যোগে ওই ছাত্রী বলেছেন, 'অভিযু'ক্ত কৌশিক পড়াশোনার বিষয়ে আলোচনা করবে এমন কথা বলে গত সোমবার তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি দুপুরে বিভাগী সেমিনার লাইব্রেরিতে দেখা করতে যান। সেখানে তাকে তিন দফায় যৌ'ন হ'য়রানি করা হয়।'

ঘ'টনার ব'র্ণনা দিয়ে অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী দা'বি করেন, বিভাগীয় সেমিনারে কৌশিক হঠাৎ তাকে জ'ড়িয়ে ধ'রেন। তখন সেমিনারে কেউ ছিলো না। ঘ'টনার আকস্মি'কতায় আমি অপ্রস্তু'ত হয়ে পড়ি এবং রেগে যাই। এরপর কৌশিক ব্যাপারটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে এবং পড়াশোনা সং'ক্রান্ত আলোচনা শুরু করে। এরপর নিজেকে সামলে নিয়ে যখন সেমিনার থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি, তখন সে আমার পথ আ'গলে ধ'রে আমাকে আ'টকানোর চেষ্টা করে। এ সময় সে পুনরায় অশা'লীনভাবে স্প'র্শকাতর স্থানে বাজেভাবে স্পর্শ করে বলে অভিযো'গ করেছেন তিনি।

যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের ওই ছাত্রীর অভিযো'গ করে বলেন, 'কি করবো বুঝতে না পেরে তাকে ধা'ক্কা দিয়ে দৌঁড়ে সেমিনার থেকে বের হয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটে সিঁড়ি দিয়ে নিচে আসার চেষ্টা করি। এমন সময় সে পেছন থেকে এসে আবারও আমার পথরো'ধ করে এবং সপ্তম তলার সিঁড়িতে আমাকে দ্বিতীয় বারের মতো যৌ'ন নি'র্যাতন করে। আমি তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য যতই অনুনয় বিনয় করি, ততই সে ক্ষি'প্রতার সঙ্গে আমার শরীরে রীতিমতো স্প'র্শ করতে থাকে। তখন আমার মনে হয়েছে সে আমাকে ধর্ষ'ণ করার চে'ষ্টা করছে। ধ্ব'স্তাধ'স্তির একপর্যায়ে সে আমাকে ধা'ক্কা দিলে সিঁড়িতে পড়ে যাই। আমি কোনোভাবে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ঢুকে পড়ি এবং সে আমার পিছু নেয় লাইব্রেরি পর্যন্ত। লাইব্রেরিতে উপস্থিত আমার সিনিয়র আপুদের কাছে বিষয়টা জানালে তারা আমাকে বাসায় নিয়ে আসে।'

ছাত্রী বলেন, ‘পরবর্তীতে ঘ'টনার দিন সন্ধ্যা থেকে আমাকে লাগাতার ফোন দিতে থাকে। আমি তাকে ম্যাসেজ দিই, তার আচরণে আমি ক্ষিপ্ত, সে যা করেছে এটা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং এরপর থেকে আমি তার সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করতে চাই না। ম্যাসেজ পাওয়ার পর থেকে সে আমাকে অনবরত ফোন করতেই থাকে। আমি একবারও ফোন রিসিভ করিনি। মানসিকভাবে এতোটাই বিপর্য'স্ত হয়ে পড়ি যে বাসায় ফেরার পর আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাই।

লিখিত অভিযো'গে ওই ছাত্রী আরো বলেন, ঘটনার পরের দিন দুপুরে বেলা কৌশিক আমার বাসার গেটে এসে হাজির হয় এবং দরজায় সজোরে ধা'ক্কা দিতে থাকে। কৌশিক দারোয়ানকে বলে আমি তার ছোটোবোন এবং আমি অসুস্থ তাই সে আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে এসেছে। এই মর্মে দারোয়ান তাকে ভেতরে ঢুকতে অনুমতি দেয়। আমার ফ্ল্যাটের দরজায় ক'ড়া নাড়ার পর আমি ডোর হোল দিয়ে তাকে দেখে আরো বেশি আত'ঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ি এবং আমার প্যানিক অ্যা'টাক শুরু হয়। সে সময় আমার বাসার গৃহকর্মী ছাড়া ফ্ল্যাটে অন্য কেউ ছিলো না। সে দরজার বাইরে থেকে চি'ৎকার করে আমার নাম ধরে ডাকতে থাকে। আমার গৃহকর্মী বারবার বলতে থাকে যে বাসায় কেউ নেই। সে সজোরে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে এবং ভেতর থেকে দরজা না খোলায় সিঁড়িতে বসে থাকে। এমন সময় বাসার দারোয়ান শব্দ শুনে ওপরে এসে তাকে বাসা থেকে বের করে।

কিন্তু সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় আমি বাসা থেকে বাজার করার জন্য বের হয়ে দেখি সে তখনও আমার বাসার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে এবং আবারও রাস্তায় আমার পথরো'ধ করে সিন ক্রিয়েট শুরু করে। আমি কোনোমতে একটা রিকশায় উঠে স্থানত্যাগ করি। বর্তমানে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছি এবং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এই বিষয়ে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে কবির আহাম্মেদ কৌশিক বলেন, আবেগের বশবর্তী হয়ে এটা করেছি। আমার উচিত হয়নি। কি করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তার শরীরে হাত দিয়েছি আর কি। প্রক্টর স্যার আমাকে ডেকেছেন। স্যারের সঙ্গে বিস্তারিত বলবো।

এদিকে ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযো'গ পেয়েছেন নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘তদ'ন্তের পর অভিযো'গের প্রমাণ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে