এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ভারত থেকে আমদানি হওয়া পেঁয়াজ আজ বুধবার রাতে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বাজারে পৌঁছবে। বৃহস্পতিবার থেকে সেগুলো ৪০-৪১ টাকা দরে বিক্রি হবে। আর ভারতের মূল পেঁয়াজ আসবে আগামী শনিবার। ফলে রবিবার থেকে খাতুনগঞ্জের বাজারে সেই পেঁয়াজ ৩৮-৪০ টাকার নিচে নামবে বলে আভাস দিয়েছেন আমদানিকারকরা।
এখন ভারত থেকে হিলি, ভোমরা, সোনামসজিদসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে যে পেঁয়াজ আসছে সেগুলো সীমান্তের ওপারে আড়ত থেকে সংগ্রহ করা। বাংলাদেশে মূল পেঁয়াজ আসে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে। সেই পেঁয়াজ বাংলাদেশে পৌঁছবে শুক্রবার।
জানতে চাইলে হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার আমার ৩শ টন পেঁয়াজ ঢুকেছে; সবগুলো সীমান্তের ওপার থেকে দ্রুত সংগৃহীত।
এরমধ্যে কিছু পেঁয়াজ বুধবার সকালে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে যাবে। সেগুলো ৪০-৪১ টাকায় বিক্রি হবে। আর আমরা এই পেঁয়াজ হিলিতে বিক্রি করছি ৩৬-৩৮ টাকায়।’ তিনি বলেন, নাসিক থেকে পেঁয়াজ আসবে শুক্রবার। সেই পেঁয়াজ আসলে আড়তে ৪০ টাকার নিচে বিক্রি সম্ভব হবে। পর্যায়ক্রমে দাম আরো কমবে।
এদিকে, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির খবরেই গত দুদিনে পেঁয়াজের দাম কমতে কমতে কেজি ৫০ টাকায় নেমেছে। খাতুনগঞ্জের পাইকারিতে গতকাল মঙ্গলবার দেশিয় পেঁয়াজের দর দেওয়া হয়েছিল কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় কিন্তু কোনো ক্রেতা নেই। অথচ রবিবার এই পেঁয়াজের দর কেজিতে ১শ টাকা উঠেছিল। এরপর ভারত থেকে আমদানির খবরে সোমবার দাম কমে কেজি ৭০ টাকায় নামে; মঙ্গলবার আরো কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় নেমে আসে।
জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত দুদিন আড়তে অলস সময় পার করছি। দেশিয় পেঁয়াজের দর দেওয়া আছে ঠিকই কিন্তু কোনো বেচাবিক্রি নেই। কেজি ৯৫ টাকার পেঁয়াজ দুদিন পর গতকাল ৫০ টাকা দিয়েও ক্রেতা মিলছে না। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে পৌঁছলেই দাম স্থির হবে। এরপরই খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসবেন।
জানা গেছে, পেঁয়াজ আমদানি অনুমতিপত্র দেয় সরকারের কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ দপ্তর। সোমবার থেকে অনুমতি দেওয়া শুরু হলে প্রথম দিনেই ২ লাখ ৫৪ হাজার টন অনুমতিপত্র দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
ড. রেজাউল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, গত দুদিনে ৪ লাখ ৩৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র বা আইপি খোলা হয়েছে। ৩৬৩ আইপির বিপরীতে এই অনুমোদন দিয়েছি। এর মধ্যে গতকাল সকাল পর্যন্ত ১২৮৮ টন পেঁয়াজ দেশে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কত পেঁয়াজ এসেছে তার হিসাব পাওয়া যাবে বুধবার সকালে।
ভারত থেকে আমদানি শুরু এবং পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনো আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি বাজারে গতকাল মঙ্গলবারও পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হচ্ছিল ৮৫ থেকে ১০০ টাকায়।
ফয়েজ স্টোরে ছোট পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৮০ টাকা, হক ভাণ্ডার স্টোরে ৮৫ টাকা, চেমন গ্রোসারিতে প্রতিকেজি বড় সাইজ ১০০ টাকা, ভাই ভাই ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বড় সাইজের ৯৫ টাকা ও ছোট সাইজের ৮৫ টাকা এবং খান ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বড় পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও ছোট সাইজের ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজার থেকে তারা প্রতিকেজি অন্তত ৭০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে কিনেছেন। সেজন্য বাড়তি দরেই বিক্রি করতে হচ্ছে। কমদামে পেঁয়াজ আসলে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমবে।