এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অধ্যায় এখন পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে। এর পাশাপাশি পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের নামে একটি নতুন গল্পও যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও উদ্ধৃতি বাদ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, এবং সেখানে জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন অঙ্কন বা গ্রাফিতি যুক্ত করা হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠ্যবই পরিমার্জন করছে। নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে একাধিক বইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে অধ্যায় যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে এবং এ বিষয়ে বৈঠক করে সর্বসম্মতভাবে একমত পোষণ করেছে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানান, পাঠ্যবই থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বাদ দেওয়ার পাশাপাশি জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে অধ্যায় যুক্ত করার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। তবে এটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, "আমরা ভালো মানের লেখা চাইছি। এজন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। অভ্যুত্থানের কিছু অঙ্কন বিভিন্ন বইয়ে স্থান পেয়েছে।"
অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান আরো জানান, কিছু বই ছাপানোর দায়িত্ব ছিল ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর, কিন্তু সমালোচনার কারণে তাদের বাদ দিয়ে দেশীয় প্রকাশকদের কাছে বই ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১৮টি স্লটের জন্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বাতিল হয়েছে এবং নতুন করে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, "২০১২ সালে প্রণীত শিক্ষাক্রমের আলোকে আগামী বছরের পাঠ্যবই পরিমার্জনে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই প্রেসে পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণির বইও পাঠানো হবে। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে সব বইয়ের কাজ শেষ হবে এবং জানুয়ারি মাসেই শিক্ষার্থীদের কাছে পরিমার্জিত পাঠ্যবই পৌঁছাবে।"
জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তনের জন্য ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে, যা ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হবে। তার আগে, ২০২৫ সালে শিক্ষার্থীদের ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের বই পরিমার্জন করে দেওয়া হবে।
এনসিটিবি প্রতি বছর স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৮৯ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ২৩ কোটি কপি বই ছাপায়। তবে এবার সেপ্টেম্বর মাসে বই সংশোধনের ঘোষণা আসায় নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর বিষয়টি নিয়ে কিছুটা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবুও, এনসিটিবি কর্মকর্তারা আশা করছেন, জানুয়ারি মাসেই নতুন বই শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।