এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসায় ১ লাখ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে ২ লাখ ৬৩ হাজার মেট্রিক টন ছোলা আমদানি হয়েছে বাংলাদেশে। শুধু জানুয়ারিতেই ৯৭ হাজার মেট্রিক টন ছোলা আমদানি হওয়ায় প্রতি কেজি ছোলার দাম ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় নেমে এসেছে। এতে আসন্ন রমজানে ছোলার সংকট হবে না ও দামও সাধারণ ক্রেতার নাগালে থাকবে বলেই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুই মাস আগেও বিশ্ববাজারে অস্ট্রেলিয়ার ভালো মানের প্রতি মেট্রিক টন ছোলার বুকিং রেট ছিল ৮৮০ থেকে ৯০০ মার্কিন ডলার। বর্তমানে সেই ছোলার বুকিং রেট কমে দাঁড়িয়েছে ৬৮০ থেকে ৭০০ মার্কিন ডলারে। আর এই সুযোগে রমজান সামনে রেখে বেড়েছে ছোলা আমদানি।
চট্টগ্রাম চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ জেহাদী বলেন, দুই-আড়াই মাস আগে যে ছোলা কেজি প্রতি ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, সেটিই এখন কমে বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকায়। এর মূল কারণ প্রতি টনে প্রায় ২০০ ডলার কমেছে দাম।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের পুরো বছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার মেট্রিক টন ছোলা আমদানি হলেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই এককভাবে ৯৭ হাজার ১৮১ মেট্রিক টন ছোলা আমদানি হয়েছে। কোনো রকম কারসাজি না হলে ছোলার দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করেন শুল্ক কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনার কাউছার আলম পাটওয়ারী বলেন, বাজারে নতুন করে সিন্ডিকেট তৈরি না হলে ও কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা বজায় থাকলে রমজানে মানুষ খুবই কম দামে ছোলা কিনতে পারবেন।
পাইকারি পর্যায়ে বর্তমানে ভালো মানের প্রতি কেজি ছোলা ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুধু প্রিমিয়াম কোয়ালিটির জবা ও সূর্যমুখী ব্র্যান্ডের ছোলার দর ১০২ টাকা। অবশ্য এই ছোলা এক মাস আগেও ১২২ টাকায় বিক্রি হতো।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মাস্টার ট্রেডিংয়ের মালিক শাফায়েত হোসেন ছাকিব বলেন, ছোলার পর্যাপ্ত আমদানি রয়েছে। এতে বাজারে সামঞ্জস্যতা ফিরেছে। কমছে দামও। পরিস্থিতি এমন থাকলে রমজানে বাজারে স্বস্তি বিরাজ করবে।
দুই বছর আগে ডলার সংকটের মুখে অস্ট্রেলিয়া থেকে ছোলা আমদানি কমে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিউনিশিয়া এবং ইথিওপিয়া থেকে আনা ছোলা বাংলাদেশে ১০০ মার্কিন ডলার বাড়তি দরে বিক্রি করতো ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে, অস্ট্রেলিয়া থেকে সরাসরি ছোলা আসার পরিমাণ বাড়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ভারতের এই কৌশল।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স হাজী স্টোরের মালিক জয়নাল আবেদীন মিন্টু বলেন, এখন ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীই এলসি করতে পারছেন। এতে বাড়ছে আমদানি। ফলে বাজারও স্থিতিশীল রয়েছে।
উল্লেখ্য, রেকর্ড আমদানি হলেও কৃষিপণ্য হিসেবে ছোলা আমদানিতে কোনো শুল্ক পায় না চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ।