এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নিত্যই নতুন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কয়েকজনকে আটক করলেও কর্মসূচি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন অব্যাহত ছিল।
ফ্যাসিবাদী সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কঠোর নজরদারির মধ্যেও সমন্বয়করা কিভাবে কর্মসূচির পরিকল্পনা, কর্মসূচি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করতেন সেসব বিষয়ে কথা বলেছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
আন্দোলনের এক দিনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের লোকজন কথা বলতে চায় আমাদের সঙ্গে ৷ তারা চেয়েছিল আমরা যেন সবাইকে নিয়ে ওদের সঙ্গে বসি, যাতে ওদের পক্ষে সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
কিন্তু সবাইকে নিয়ে ওদের সঙ্গে আমরা বসিনি, আমাদের কেউ কেউ বসেছে আর পরিকল্পনা করেই কাউকে কাউকে বাইরে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো গোয়েন্দাদের সঙ্গে মিটিংয়ে বসেছি, আর আসিফকে (আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) রাখা হয়েছে বাইরে। আমাদের মিটিং শেষ হওয়ার আগেই সে পরের দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছে। গোয়েন্দারা বারবার এভাবে বিভ্রান্ত হয়েছে।
ওরা বুঝতে পারত না, কাকে বললে কী হবে? কে মূল নেতৃত্বে?’ এ বিষয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ক্যাম্পাসে হামলা করে আমাদের হল পাড়ায় কোণঠাসা করা হয়েছিল সেদিন। ৪টা বাহিনী একাসাথে চার্জ করেছিল। প্রতিবার ফোর্স অ্যাডভান্স হয় আর ভিসির বাসভবনে বসে ডিজিএফআইয়ের কর্তা আমাকে কল দিয়ে বলে মিটিংয়ের জন্য রাজি হলে স্টুডেন্টদের যেতে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য মিটিংয়ে বসাটা ছিল সর্বশেষ পর্যায়।
বঙ্গবন্ধু হলের পকেট গেটে ছাত্রলীগ, যুবলীগ অস্ত্রশস্ত্র অপেক্ষা করছিল। আর এদিকে জয়েন্ট ফোর্সেস সূর্যসেন হল ক্যাফে পর্যন্ত চলে আসে। কোণঠাসা হয়ে আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার জন্য রাজি হতে হয়। ওরা মিটিংয়ে আমাকে বারবার চাইলেও যাওয়ার আগে নাহিদ ভাই আমাকে বাইরে থাকতে বললেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘গুলিস্তান থেকে কাপড় বদলে (যাতে সহজে না চেনা যায়) এক ভাইয়ের বাসায় গিয়ে পরের দিন থেকে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করি।
সিদ্ধান্ত ছিল হরতাল দেওয়ার। যেহেতু হরতাল শব্দের সাথে ভায়োলেন্স, জ্বালাও, পোড়াও ফ্যামিলিয়ার তাই ভাষাগত দিক চিন্তা করে প্রগ্রামের নাম দিয়েছিলাম কমপ্লিট শাটডাউন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে চাইলেও কমপ্লিট শাটডাউনের দিনগুলোতে প্রথম দফায় চালানো হয় হত্যাযজ্ঞ।’