বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৯:৪৭:২৩

বড় সুখবর, যে প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চায় ইউরোপ

বড় সুখবর, যে প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চায় ইউরোপ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় ইউরোপের দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ জনবল নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সোমবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সভাকক্ষে দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ইইউ যৌথ কমিশনের ১১তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এই আগ্রহের কথা জানায় ইইউ যৌথ কমিশন।

এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী। ইইউর পক্ষে নেতৃত্ব দেন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি।

ইউরোপের দেশগুলো প্রায় ১০টি খাতে বাংলাদেশ থেকে জনবল নিতে আগ্রহী। ইইউভুক্ত ওই দেশগুলোতে বৈধপথে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে দুইপক্ষের সম্মতিতে রোডম্যাপটি প্রকাশ করা হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি, ইতালি, গ্রিস ও রোমানিয়া জনশক্তি নিতে আগ্রহী। যৌথ কমিশন সভায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে খাতগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে-আইসিটি, কেয়ারগিভিং, নির্মাণশিল্প, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি, কৃষি ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত, জাহাজ নির্মাণ ও তৈরি পোশাকশিল্প।

সভায় এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও বাংলাদেশ যেন ইউরোপের বাজারে জিএসপি সুবিধা পায় সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বহুপাক্ষিক উদ্যোগের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টিও আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।

বৈঠকে ট্যালেন্ট পার্টনারশিপের অগ্রগতি নিয়ে বিশদ আলোচনা করে বাংলাদেশ-ইইউ। একদিকে ইউরোপ বৈধপথে আরও দক্ষ শ্রমিক চায়, অন্যদিকে অবৈধপথে নানানভাবে অনেক বাংলাদেশি ইউরোপে বসবাস করছে। তাদের বৈধতা দেওয়ার সুপারিশও করেছে বাংলাদেশ।

বৈঠকে নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইইউ। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) আইনি কাঠামোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশোধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।

বৈঠকে মানবাধিকার, সুশাসন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইইউ। বর্তমানে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে, তাতে মানবাধিকার ও সুশাসন উন্নত করার এ বিশাল সুযোগ এনে দিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক, বহুত্ববাদী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের দিকে সংস্কারের অগ্রগতি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে বৈঠকে স্বাগত জানিয়েছে ইইউ।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, জিএসপি নীতির সংশোধন নিয়ে ইইউ প্রতিনিধিদের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে অন্যতম ইইউ নতুন (খসড়া) জিএসপি স্কিম, বিশেষ করে সুরক্ষা ধারাগুলো সংশোধন করার কথা বিবেচনা করা। যেন বাংলাদেশের সব পণ্য, যার মধ্যে তৈরি পোশাক (আরএমজি) পণ্যগুলো জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশের পণ্য যেন শুল্কমুক্তভাবে ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করতে পারে সেজন্য জিএসপির কিছু নীতি সংশোধন করার অনুরোধ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিলে ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম ঘোষণা করে ইইউ। এর মাধ্যমে ইইউভুক্ত দেশগুলোর বাইরে বাংলাদেশসহ সাতটি দেশকে বিবেচনায় নিয়েছে, যেখান থেকে ইইউভুক্ত দেশগুলো দক্ষ শ্রমিক নিতে চায়। সে হিসেবে বৈধপথে ইউরোপে বাংলাদেশি পাঠানোর সুযোগ আরও বাড়বে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে