এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : একযোগে বেশি গ্রাহক টাকা তুলতে গেলে পৃথিবীর কোনো ব্যাংকই টিকবে না। কিছু গ্রাহকের আমানতের টাকা উত্তোলনের প্রয়োজন না হলেও তাঁরা টাকা তুলতে যাচ্ছেন। ফলে কিছু কিছু ব্যাংকের তারল্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
অপ্রয়োজনে বা এক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অন্য ব্যাংকে রাখার প্রবণতা না কমলে সব গ্রাহকের টাকা একসঙ্গে ফেরত দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।
তিনি গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। মুখপাত্র বলেন, ‘গ্রাহকের আমানতের টাকা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই, সবাই তাঁর আমানতের টাকা ফেরত পাবেন। কিছুটা সময় লাগবে ব্যাংকগুলোর ঘুরে দাঁড়াতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিকল্পনা আছে ব্যাংকগুলোকে ভালো অবস্থানে নিয়ে আসতে।
আমানতকারীদের আহবান করছি, প্রয়োজনের বেশি টাকা তুলবেন না। আমরা আস্থা ফেরাতে চাই। আমরা সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে গত দেড় মাসে পাঁচ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার সাপোর্ট দিয়েছি। যদি আরো বেশি সাপোর্টের প্রয়োজন হয় তাহলে সে বিষয়েও বিবেচনা করা হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনো ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগ দিতে পারে না। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী একটি গ্রুপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে রিসিভারের বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে অন্য কোনো গ্রুপে রিসিভার দেওয়ার জন্য আদালতের কোনো নির্দেশনা এখনো আসেনি।
কোনো গ্রুপ ফরমাল চ্যানেলে অর্থ পাঠালে বাংলাদেশ ব্যাংক তার তদন্ত করবে। কিন্তু হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার হলে সেটা তদন্ত করা কঠিন। বিএফআইইউ এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে।’
ঋণ অনিয়ম নিয়ে কাজের অগ্রগতি বিষয়ে তিনি জানান, আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ এরই মধ্যে অনেক ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তারা কোনো তথ্য দেয়নি।
টাস্কফোর্স বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘একটি টাস্কফোর্স ব্যাংকিং সংস্কারে কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে দ্বিতীয় টাস্কফোর্স কাজ করছে। তৃতীয়টা পাচার করা টাকা ফেরত আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এখানে বিভিন্ন দেশের আইনজীবী ও কনসালট্যান্ট নিয়োগের কাজ চলছে।’ বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসি রেট বাড়ানোর পর মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে এবং সামনে এই ধারাবাহিকতা থাকলে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামবে বলেও জানান মুখপাত্র।
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের অনিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।