এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সরবরাহ কম ও চাহিদা বাড়ার অজুহাতে বাজারে ফের বাড়তে শুরু করেছে মুরগির দাম। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় কমেছে ডিমের দাম।
বাজার নিয়ন্ত্রণে গত সেপ্টেম্বরে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তবে সে সময় উল্টো দাম বেড়ে অস্থীতিশিল হয়ে পড়ে ডিম-মুরগির বাজার। নানা অভিযান ও সভা শেষে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে এলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে এসে ফের উত্তাপ বাড়ছে মুরগির বাজারে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বেশকটি বাজার ঘুরে চিত্র দেখা যায়, কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। ঊর্ধ্বমুখী অন্যান্য মুরগির দামও।
বিক্রেতারা জানান, কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মুরগি ব্যবসায়ী দিদার জানান, কাপ্তানবাজারে মুরগির দোকান উচ্ছেদ করে দেয়ায় বাজারে মুরগি কম আসছে। এছাড়া বর্তমানে বিয়ের মৌসুম চলায় চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। এতে বাড়তে শুরু করেছে দাম।
সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে দাম কমায় সম্ভাবনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, জানুয়ারি থেকে খামার বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রান্তিক খামারিরা। খামার বন্ধ হলে আগামী কয়েকমাসে মুরগির বাজারে চরম অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
তবে এটিকে বাজার অস্থির করার কৌশল দাবি করে ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর ইস্যু খোঁজায় ব্যস্ত থাকে সবসময়। কোনো একটি ইস্যু পেলে সেটিকে পুঁজি করে বাজার অস্থিতিশীল করে পকেট কাটে ভোক্তার। মুক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীদের অসাধু সিন্ডিকেট ভাঙতে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু জরিমানা করে বাজারে স্বস্তি ফেরানো সম্ভব না।
এদিকে দাম কমেছে ডিমের। ডজন প্রতি এক লাফে ৫ টাকা কমে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩৫-২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে ডিমের সরবরাহ অনেক বেড়েছে। এতে দাম কমে আসছে। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ডিম বিক্রেতা রায়হান বলেন, কিছুদিন আগে ডিমের বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল তা পুরোপুরি কমে গেছে। কমছে ডিমের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি ডজনে ৫টাকা দাম কমেছে। তবে জানুয়ারি খামার বন্ধ হলে দাম আবারও বেড়ে যেতে পারে।
খামার বন্ধ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার সময় সংবাদকে বলেন, সরকার ১০ দফা দাবি আগামী ২ মাসের ভিতরে পূরন করার আশ্বাস দেয়ায় আগামী পহেলা জানুয়ারী ডিম মুরগির উৎপাদন বন্ধের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। কাপ্তানবাজারে মুরগির দোকান উচ্ছেদ করে দেয়ায় বর্তমানে বাজরে মুরগির দাম বাড়ছে। সেখানকার ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।