এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : পঞ্চগড়ে দু-দিন ধরে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা। এর মাঝেই বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এতে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। তীব্র এই শীতে চরম দুর্ভোগ বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দু-দিন ধরে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে বলে জানিয়েছে জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কার্যালয়।
বুধবার সকাল থেকেই দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে প্রান্তিক এ জেলা। বৃষ্টির মতো ঝরছে বরফ শিশির। শহর ও গ্রামের সড়কগুলোতে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। কুয়াশার সঙ্গে হিম বাতাস ও বরফ শিশির ঝরায় কমে গেছে মানুষের চলাচল। প্রয়োজনের বাইরে অনেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের যানবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
এমনিতে টানা শীতের কারণে আয় রোজগার কমেছে নিম্ন আয়ের মানুষদের। ঠিকমতো কাজে যেতে না পারায় দুর্ভোগে পড়েছেন ভ্যান চালক, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিন মজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।
তারা বলছেন, শীতের কারণে পরিবারে কারো না কারও জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য রোগ লেগেই আছে। এদিকে আয় রোজগার কম, আরেক দিকে রোগের চিকিৎসা সবমিলিয়ে পরিস্থিতি বিপাকে। এছাড়া শীতে কষ্ট পাচ্ছে গৃহপালিত পশুরাও। তাদের সুরক্ষায় রাখতে পুরোনো কাপড় কিংবা চটের ব্যাগ পরাতে হচ্ছে।
পাথর শ্রমিক আশরাফুল ও সোহরাব বলেন, পাথর তুলতে সাইটে যাচ্ছি। পরিবারের কথা চিন্তা করে শীতের মধ্যেই কাজে যেতে হচ্ছে।
একই কথা বলেন ভ্যানচালক আরশেদ আলী ও দেলোয়ার হোসেন।
গ্রামাঞ্চলের নারীরা জানান, ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে প্রকৃতি। দিনের তুলনায় সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত বরফ হয়ে উঠে বিছানা থেকে সব আসবাবপত্র। ঘরের ফ্লোরে পা দেওয়া যায় না। ঘরে রাখা পানি বরফ হয়ে থাকে। এসব পানি স্পর্শ করলে হাত যেন অবশ হয়ে যায়। ঠান্ডা বাতাস আমাদের কাবু করে ফেলেছে। সন্ধ্যার পর বাড়ির উঠানে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণে চেষ্টা করি।
এদিকে তাপমাত্রা ওঠানামা করায় শীতজনিত রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন জেলার হাসপাতালগুলোতে এসব রোগ নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন রোগীরা।
জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, দু-দিন ধরে তাপমাত্রা কমে ৯ ডিগ্রির ঘরে এসেছে। এ তাপমাত্রায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। বুধবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দু-দিন ধরে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।