এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গণঅধিকার পরিষদ শুরু থেকেই গণহত্যার বিচারে সোচ্চার জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, এ ব্যাপারে সরকারের তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট না করলে যমুনা ঘেরাও করা হবে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগ যে পাপ করেছে, তাতে তারা কোনো ক্ষমা পেতে পারে না। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সহানুভূতি দেখানো মানে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। এ বেইমানি যারা করবে, তাদের অবস্থাও আওয়ামী লীগের মতো হবে।
গণঅধিকার পরিষদের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের অযোগ্য উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভবপর নয়। রাষ্ট্র সংস্কার করতে বিপ্লবী উপদেষ্টা দরকার। কিন্তু এ উপদেষ্টাদের অধিকাংশই সুশীল। তাই তাদের কাছে রাষ্ট্র সংস্কার প্রত্যাশা করি না।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে উপদেষ্টাদের ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সমকালে তাদের গাড়ি বিলাস ও গাড়ি ব্যবহারে অনিয়ম প্রকাশিত হয়েছে। এটাই কি রাষ্ট্র সংস্কার?
রাশেদ খাঁন বলেন, আমরা গত ৬ মাসের জবাবদিহিতা চাই, রাষ্ট্র সংস্কারের নমুনা দেখতে চাই। উপদেষ্টাদের আর্থিক হিসাব জনসম্মুখে পেশ করতে হবে। তারা যে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, আগে নিজেদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুক।
এ সময় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমিতে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ স্যারকে পেছনে দাঁড় করিয়ে রাখা কি রাষ্ট্র সংস্কার? অযোগ্যরা যোগ্যদের সম্মান করতে জানে না।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আবার সরকারের সারাদেশের সব দপ্তরের কমিটিতে একজন করে ছাত্র প্রতিনিধি দেওয়া হচ্ছে। কমিটিতে ছাত্রদের কাজ কী? সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের খবরদারি খারাপ বার্তা দিচ্ছে। সরকারে কে কোথায় বসবে, এগুলো যদি ছাত্ররা ঠিক করে, তাহলে তাদের সম্পর্কে ভুল মেসেজ যাবে।
তিনি আরও বলেন, দল গঠন করবেন, শুভকামনা রইল। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের চেতনা এককভাবে দখল করে সরকারের সহযোগিতায় কিংস পার্টি জনগণ মানবে না। দল গঠন করতে চাইলে উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের আগে পদত্যাগ জনগণ মানবে না। এসব করলে জাতি বিশাল সংকটে পড়বে।
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসানও বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। বরং অনেকাংশেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, আওয়ামী লীগের বিষয়ে নমনীয়তা ও উদারতা।
গণঅধিকার পরিষদের এই মুখপাত্র বলেন, আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে, নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
ঢাকা জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে উচ্চতর পরিষদ সদস্য মাহফুজুর রহমান, সহসভাপতি আবদুর রহমান, জাফর মাহমুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ নুরুল করিম শাকিল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।