এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : নানা প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে দৃঢ় আত্মবিশ্বাস নিয়ে লালমনিরহাট রেল বিভাগে একমাত্র নারী ট্রেনচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফরিদা আক্তার। মাত্র ১০ মাস বয়সী কন্যাসন্তানকে বাড়িতে রেখে তিনি প্রতিদিন নিয়মিত ট্রেন চালান। তার সাহসিকতা ও দক্ষতায় মুগ্ধ রেল বিভাগ। চার সন্তানের জননী এই নারী পেশাগত দায়িত্বে কখনো পিছপা হননি।
দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা ফরিদা আক্তার লালমনিরহাট রেল স্টেশনের সরকারি কোয়ার্টারে স্বামী টুটুল ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন। টুটুল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
ফরিদা আক্তার জানান, ছোটবেলা থেকেই চ্যালেঞ্জিং পেশায় কাজ করার ইচ্ছা ছিল তার। সেই লক্ষ্যেই ২০১৪ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ট্রেনচালক হিসেবে যোগ দেন। দীর্ঘ ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় এখন এই কাজ তার নেশায় পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, “পরিবারের সমর্থন ছাড়া এ পেশায় টিকে থাকা কঠিন। একজন নারী ট্রেনচালকের পাশাপাশি পুরুষ ট্রেনচালকেরও সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। সমাজের নেতিবাচক কথা নিয়ে আমি ভাবি না, নিজের কাজে মনোযোগ দিই।”
ফরিদা তার সন্তানদের প্রতি দায়িত্বশীল হলেও পেশার প্রতি রয়েছে অগাধ ভালোবাসা। তার ছোট মেয়েটি মাত্র ১০ মাসের হলেও কাজে বের হলে সন্তানেরা বিরক্ত হয় না বরং সমর্থন করে।
ট্রেন চালানোর পাশাপাশি যান্ত্রিক ত্রুটি হলে নিজেই তা সমাধান করেন ফরিদা। তার কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও পারদর্শিতায় রেল বিভাগও গর্বিত। লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় লোকো ইনচার্জ কাজী সুমন বলেন, “নারীরা এখন ঘরে সীমাবদ্ধ নেই, তারা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। ফরিদার মতো নারীরা প্রমাণ করছেন, কোনো পেশাই নারীদের জন্য অসম্ভব নয়।”
ফরিদা আক্তারের এই অদম্য পথচলা নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। সমাজের বাধা পেরিয়ে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, একাগ্রতা আর আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনো পেশায় সফল হওয়া সম্ভব।