এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সোনার বাজার সম্পর্কে সচেতন ব্যক্তিদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বাংলাদেশে সোনার মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হয় তা জানার জন্য নীচের প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন, যা Google-এর “People Also Ask” ফিচারে র্যাংকিংয়ের উপযোগীভাবে তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশে সোনার দাম নির্ধারণের প্রধান নীতিগুলি
Q1: বাংলাদেশে সোনার মূল্য নির্ধারণে প্রধান কারণ কী?
সংক্ষিপ্ত উত্তর: আন্তর্জাতিক বাজার দর, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (BAJUS) সিদ্ধান্ত এবং ট্যাক্স নীতি।
বিস্তারিত:
বাংলাদেশে সোনার মূল্য নির্ধারণে তিনটি প্রধান ফ্যাক্টর ভূমিকা রাখে—
আন্তর্জাতিক সোনা বাজার: লন্ডন ও নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে সোনার দাম ওঠানামার উপর ভিত্তি করে BAJUS স্থানীয় মূল্য নির্ধারণ করে। স্থানীয় ডিমান্ড-সাপ্লাই: দেশের জুয়েলারি ব্যবসা ও আমদানি পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে দাম পরিবর্তিত হয়।
সরকারি শুল্ক ও কর: বাংলাদেশ সরকার সোনার উপর শুল্ক নির্ধারণ করে যা দাম বাড়াতে বা কমাতে ভূমিকা রাখে।
উদাহরণ: ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশেও প্রতি ভরিতে ২,০০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
বাংলাদেশে সোনার দাম কীভাবে নির্ধারিত হয়?
Q2: বাংলাদেশে সোনার মূল্য কারা নির্ধারণ করে?
সংক্ষিপ্ত উত্তর: বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (BAJUS)।
বিস্তারিত:
BAJUS প্রতিদিন আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণ করে এবং বাংলাদেশে সোনার দাম নির্ধারণ করে। বাজারে বড় জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা এই প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলতে পারেন।
উদাহরণ: গত বছর, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে BAJUS এক সপ্তাহে তিনবার সোনার দাম পুনর্নির্ধারণ করে।
Q3: বাংলাদেশে ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট, ও ১৮ ক্যারেট সোনার দামের পার্থক্য কী?
সংক্ষিপ্ত উত্তর: ক্যারেটের মান অনুযায়ী স্বর্ণের বিশুদ্ধতা নির্ধারিত হয়।
বিস্তারিত:
২২ ক্যারেট (৯১.৬% বিশুদ্ধতা) – সবচেয়ে দামি ও জনপ্রিয়।
২১ ক্যারেট (৮৭.৫% বিশুদ্ধতা) – দাম তুলনামূলক কম।
১৮ ক্যারেট (৭৫% বিশুদ্ধতা) – দাম সবচেয়ে কম এবং সাধারণত গহনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ: ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ১,১০,০০০ টাকা/ভরি, ২১ ক্যারেট ১,০৫,০০০ টাকা/ভরি এবং ১৮ ক্যারেট ৯০,০০০ টাকা/ভরি ছিল।
Q4: আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশে সোনার দামের মিল-অমিল কেন?
সংক্ষিপ্ত উত্তর: আমদানি শুল্ক ও ডলারের বিনিময় হার।
বিস্তারিত:
বাংলাদেশে সোনার দাম আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় কিছুটা বেশি হয়, কারণ সরকার আমদানির উপর শুল্ক ধার্য করে এবং ডলার বিনিময় হার পরিবর্তনের কারণে দাম ওঠানামা করে।
উদাহরণ: ২০২৩ সালে ডলারের দাম বৃদ্ধির ফলে আমদানি শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে সোনার দাম আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় ৩,০০০ টাকা বেশি ছিল।
Q5: বাংলাদেশে সোনার দাম কি প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়?
সংক্ষিপ্ত উত্তর: না, সাধারণত BAJUS নির্দিষ্ট সময়ে দাম পরিবর্তন করে।
বিস্তারিত:
প্রতিদিন আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম ওঠানামা করলেও, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি সাধারণত সোনার নতুন দাম সপ্তাহে এক বা দুইবার পরিবর্তন করে। বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি এক সপ্তাহে একাধিকবার পরিবর্তন হতে পারে।
উদাহরণ: ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এক সপ্তাহে তিনবার দাম পরিবর্তন হয়েছিল, কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।
Q6: বাংলাদেশে সোনা কেনার আগে কী বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত?
সংক্ষিপ্ত উত্তর: বিশুদ্ধতা, দাম, ও হলমার্কিং।
বিস্তারিত:
সোনা কেনার আগে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে—
হলমার্ক সনদ: নিশ্চিত করতে হবে যে গহনা BSTI-অনুমোদিত হলমার্ক পেয়েছে।
ক্যারেট চেক করুন: ২২, ২১, বা ১৮ ক্যারেট কিনছেন কিনা যাচাই করুন।
BAJUS নির্ধারিত মূল্য যাচাই করুন: ভরির হিসাবে দাম সঠিক কিনা তা যাচাই করুন।
উদাহরণ: ঢাকার এক ক্রেতা ভুল তথ্যের কারণে বাজারদরের চেয়ে ৫,০০০ টাকা বেশি দিয়ে গহনা কিনেছিলেন, যা পরে তিনি বুঝতে পারেন।
Q7: বাংলাদেশে সোনা বিক্রির সময় কত টাকা কাটা হয়?
সংক্ষিপ্ত উত্তর: সাধারণত ৫% – ১০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
বিস্তারিত:
সোনা বিক্রির সময় পুরাতন সোনার উপর মজুরি কাটা হয়। এছাড়া, গহনার ডিজাইন বা ব্যবহারের কারণে ওজন কিছুটা কমে যেতে পারে, যা বিক্রয় মূল্যে প্রভাব ফেলে।
উদাহরণ: এক গ্রাহক নতুন কেনার ১ মাস পর সোনা বিক্রি করতে গেলে দেখেন, প্রতি ভরিতে ২,৫০০ টাকা কম দিচ্ছে।
এক কথায়
বাংলাদেশে সোনার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার, স্থানীয় চাহিদা ও সরবরাহ, এবং সরকারি শুল্ক একটি বড় ভূমিকা রাখে। BAJUS প্রতি সপ্তাহে মূল্য নির্ধারণ করে এবং সোনার বিশুদ্ধতা অনুযায়ী দাম পরিবর্তিত হয়।
আপনি যদি সোনা কেনা-বেচা করতে চান, তবে সর্বদা বাজারের চলতি দাম যাচাই করুন এবং হলমার্ক চেক করুন।