এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি এবং তিন সন্তান লাবিবা নাঈম খান, আডিভা নাঈম খান, যূলিকা নাঈম খানের নামে থাকা ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ছয় কোটি ২৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৪ টাকা রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে উপ-পরিচালক আফরোজা হক খান এসব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ চেয়ে আবেদন করেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ভিন্ন কোনো উৎস অর্থাৎ ঘুষ বা অবৈধ উপায়ে অর্থ অর্জনপূর্বক এ অর্থের উৎস আড়াল করার জন্য তার নাম, তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি, তাদের তিন সন্তান লাবিবা নাঈম খান, আডিভা নাঈম খান ও যূলিকা নাঈম খানের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা করেন। এর মধ্যে ৩৭৯ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং করাসহ নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানে টিম গঠন করা হয়। অনুসন্ধানকালে তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ১৬টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট ১৬৩টি হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বাক্তিরা এসব হিসাবে রক্ষিত অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির পূর্বে ব্যাংক হিসাব সমূহে রক্ষিত অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে অনুসন্ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা আবশ্যক।
এর আগে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী মন্টির আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন আদালত।
জানা গেছে, নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব ৯১টি। এসব হিসাবে মোট ২৪৯ কোটি টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবে মাত্র ৬৪ লাখ টাকা জমা আছে। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
তাদের তিন সন্তানের মধ্যে আডিভা নাঈম খানের হিসাবে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ২৫ লাখ এবং যূলিকা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ৬১ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব অর্থের সিংহভাগই তারা উত্তোলন করে নিয়েছেন। এ ছাড়া নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি হিসাবে জমা হয়েছে ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। প্রায় পুরো টাকা উত্তোলনের পর জমা আছে মাত্র ২১ লাখ টাকা।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা যায়, নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী-সন্তানরা মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এসব কার্ডের সর্বমোট সীমা ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। কার্ডগুলোতে বর্তমানে বকেয়া পড়েছে ৪৮ হাজার ৪০৮ টাকা।