এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চট্টগ্রাম নগরের উত্তর কাট্টলী আলহাজ মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রদলের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দিনভর দফায় দফায় এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় নগরের আকবরশাহ থানা এলাকায় আবার উভয় পক্ষের কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থানে। এ সময় সাইফুদ্দিন মারুফ নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক কর্মী ছাত্রদলের কর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এনসিপির এক সংগঠক।
জানা যায়, দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের মাঝে ছিল আকবর শাহ থানার পুলিশ।
থানার ভেতরে ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপি নেতাকর্মীরা। বাইরে ছিল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। উভয় পক্ষ সরে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এর আগে সকাল ১১টার পর থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজে শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির প্রতিনিধিদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া যায় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। তবে ছাত্রদল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) চট্টগ্রাম জেলা সংগঠক সাইদুর রহমান রাত ৮টার দিকে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজকে কয়েক দফায় ছাত্রদলের কর্মীরা মোস্তফা হাকিম কলেজে শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির প্রতিনিধিদের ওপর হামলা করেছেন। এর প্রতিবাদে বিকেল ৫টার দিকে আমরা মিছিল নিয়ে আকবর শাহ থানায় গিয়েছি।
থানায় আমাদের প্রতিনিধিদল ওসির সঙ্গে কথা বলছিল। ওই সময় ছাত্রদল মিছিল নিয়ে আবার আমাদের দিকে তেড়ে আসে। পুলিশের বাধার কারণে ভেতরে আসতে পারেনি। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছাত্রদলের মিছিলে যারা এসেছিল তাদের ৬০ শতাংশই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা আছে।’
এক নারী শিক্ষককে ওই কলেজে আসতে নিষেধ করার প্রতিবাদ করায় এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ছাত্রদলের কর্মীরা কলেজের ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। এ সময় কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিরা গেলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল ১১টার দিকে পরিচালনা কমিটির নবনির্বাচিত তিন সদস্য কলেজে আসেন। সে সময় এক নারী শিক্ষককে তারা কলেজে আসতে নিষেধ করেন। ওই নারী শিক্ষক বিষয়টি জানালে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করেন। তারা জানান, সাম্প্রতিক কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নারী শিক্ষককে কলেজ আসতে নিষেধ করেন। এর প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। সেখানে সিরাজ উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা করেন।
ছাত্রদলের আকবর শাহ থানা শাখার সদস্য ফাহিম আহমেদ বলেন, পরিচালনা কমিটির ভেতরের বিষয় নিয়ে এক নারী শিক্ষার্থী সমন্বয়কদের ডেকে আনেন। ছাত্রদল সেখানে ফুল দিতে গিয়েছিল। শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর পানি নিক্ষেপ করে। হামলার কোনো ঘটনা হয়নি। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর তারা হামলা করেছে।
এ বিষয়ে কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘এগুলো সব বানোয়াট কথা। আমার তো কাউকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার নেই। এখানে বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে কিছু মানুষ বিশৃঙ্খলা করছে। যারা একসময় ছাত্রলীগ-শিবির করত।’