শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:৫৩:৪৪

‘বাংলাদেশের এই মহতী উদ্যোগ মায়ানমার সরকারসহ সে দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত'

‘বাংলাদেশের এই মহতী উদ্যোগ মায়ানমার সরকারসহ সে দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত'

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন পরিদপ্তরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে বাংলাদেশ সরকারের জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা নিঃসন্দেহে দু’দেশের আস্থা ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবাই অবগত আছি চলতি বছরের গত ২৮ মার্চ ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প মায়ানমার এবং থাইল্যান্ডে আঘাত হানে, যার ফলে জানমালের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। এ ভূমিকম্পে মায়ানমারে মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়।’

তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশের বিপদসংকুল এ সময়ে বাংলাদেশ সরকার জরুরি উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ সরকারের এ উদ্যোগে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।’

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কর্নেল শামিমের নেতৃত্বে ইঞ্জিনিয়ার কোরের ২১ জনের একটি উদ্ধারকারী দল এবং ১০ জনের একটি মেডিকেল দল পাঠানো হয়। সেনাবাহিনী ছাড়াও নৌবাহিনীর ৩ জন, বিমানবাহিনীর ৩ জন, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ১০ জন এবং ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি অসামরিক মেডিকেল দল পাঠানো হয়।’

তিনি বলেন, ‘এই উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়ক দল প্রেরণের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর বিমান, বিমান বাহিনীর বিমান ও নৌ জাহাজ ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো এই মানবিক সহায়তাকারী দলটি অত্যন্ত সাফল্যের সাথে তাদের কার্যক্রম শেষ করে গত ১৫ এপ্রিল দেশে প্রত্যাবর্তন করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের এই মহতী উদ্যোগ মায়ানমার সরকারসহ সে দেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে যা মায়ানমারের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে দুই দেশের আস্থা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করেন, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনী প্রধানসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদানসহ সফর সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এছাড়াও সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গার জন্য ইফতার প্রস্তুত ও সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হয়েছে যা সকল মহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত ও প্রশংসিত হয়েছে।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সফরকালীন সময়ে সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘ মহাসচিব সেনাবাহিনীর সার্বিক কর্মকাণ্ড বিশেষত জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদান ও সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ঘরমুখো মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঈদের আগে ও পরে মিলে ২ সপ্তাহের বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করে।

তিনি বলেন, এর অংশ হিসেবে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ দেশের সকল জেলার বাস স্ট্যান্ড, রেল স্টেশন এবং লঞ্চ টার্মিনাল ও মহাসড়কে দিন-রাত টহল পরিচালনা, স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় যা মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

তিনি আরও বলেন, ফলশ্রুতিতে, সড়ক দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড গত বছরের তুলনায় বহুলাংশে হ্রাস পায়, যা জনসাধারণকে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছানোসহ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘনভাবে ঈদ উদযাপনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চল সমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ক অবরোধ থেকে অবমুক্ত করেছে। এখানে উল্লেখ্য যে, শিল্পাঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তা বিধানকালে গত ৯ এপ্রিল নারায়নগঞ্জের রবিন টেক্স গার্মেন্টসে অস্থিরতা প্রশমন কালে নিয়োজিত সেনাসদস্যগণ কিছু গার্মেন্টস শ্রমিক কর্তৃক ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আক্রান্ত হয় এবং এতে ২৪ জন সেনাসদস্য আহত হয়। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে সিএমএইচ এ ভর্তি হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, গার্মেন্টসে ঈদ পূর্ব অভিন্নতা মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, মন্ত্রণালয়, শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সমন্বয় সাধন করে শ্রমিকদের বেতন ও ভাতা পরিশোধে বিশেষ ব্যবস্থা করে যা শ্রমিকদের মাঝে ঈদ পূর্ববর্তী গতানুগতিক অস্থিরতা প্রশমনে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিল্পাঞ্চল ছাড়াও সেনাবাহিনী বিগত দুই মাসে ২৩২টি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে, যার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ৩৭টি, সরকারি সংস্থা অথবা অফিস সংক্রান্ত ২৪টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৭৬টি এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ছিল ১৫টি।

তিনি বলেন, গত দুই মাসে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অন্যান্য সকল আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বিত উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত মোট ২ হাজার ৪৫৭ জনকে এবং এ যাবত পর্যন্ত সর্বমোট ৭ হাজার ৮২২ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত দুই মাসে সেনাবাহিনী ৩২০টি অবৈধ অস্ত্র ও ৫৬৪ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং এ যাবত পর্যন্ত সর্বমোট ৯ হাজার ৩৭০টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৫২ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।

তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসায় জন্য সেনাবাহিনী অদ্যাবধি ৪ হাজার ৩৪০ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে, যার মধ্যে ৪৩ জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহতদের সম্মানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গত ২৩ মার্চ সেনামালঞ্চে ইফতার ও দোয়া মাহফিল এবং ২৫ মার্চ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আহত এবং শহীদ পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়, যেখানে সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত থেকে সকলের খোঁজ- খবর নেন, চিকিৎসাসহ সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সম্মানে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানেও সেনাবাহিনী প্রধান অংশগ্রহণ করেন। সেনাবাহিনীর এ আন্তরিকতায় উপস্থিত আহত শিক্ষার্থীগণ ও পরিবারবর্গ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে এবং সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যার ফলশ্রুতিতে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া দেশের সকল স্তরের জনসাধারণ আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উদযাপন করতে সক্ষম হয়।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৩ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলাতে খোলাপেটুয়া নদীর প্রায় ৩০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেলে আশে-পাশের প্রায় ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এই ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যগণ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে দ্রুততম সময়ে বাঁধটি মেরামত করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানিবন্দি মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেয়। এতে স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগ অনেকাংশে হ্রাস পায় এবং স্থানীয়রা সেনাবাহিনীর এ কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

তিনি বলেন, এছাড়া গত দুই মাসে চট্টগ্রাম, সাভার, উত্তর বাড্ডা, মিরপুর, বনানী, ভাসানটেক, গাজীপুর, পটুয়াখালী ও বাগেরহাটে সংঘটিত বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য সকল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সমন্বিতভাবে দ্রুততম সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে।

তিনি বলেন, এ সকল কাজের পাশাপাশি সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশি কূটনীতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

তিনি বলেন, এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্বও সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশের জনগণের জানমাল এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও স্থাপনায় নিরাপত্তা প্রদানসহ সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রধানের দিকনির্দেশনায় দেশের চরাঞ্চলসহ ৬২টি জেলায় সেনাসদস্যরা আইন- শৃঙ্খলা রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা, গণমাধ্যম এবং সাধারণ জনগণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে।

তিনি আরও বলেন, এই সমন্বয় ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করে চলমান কর্মধারা অব্যাহত রাখতে সেনাবাহিনী অঙ্গীকারবদ্ধ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে