সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১২:০২:১০

যে দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে

যে দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে রেকর্ড ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে, আগের অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় যা ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি। এই আয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রয়েছে সৌদি আরব প্রবাসীদের। 

যদিও ২০২২ সালের জুলাই থেকে গত মার্চ পর্যন্ত রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশ হিসেবে কখনও সংযুক্ত আরব আমিরাত, কখনো যুক্তরাষ্ট্র, কখনো যুক্তরাজ্যকে দেখানো হচ্ছিল। গত এপ্রিল মাসে আবার শীর্ষ দেশ হিসেবে সৌদি আরবের নাম উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে মোট ২৭৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার; যা মোট রেমিট্যান্সের ১৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৭ কোটি ২১ লাখ ডলার। মোট রেমিট্যান্সের ১২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বা ৩৩ কোটি ডলার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র। চতুর্থ অবস্থানে থাকা যুক্তরাজ্য থেকে ২৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ২১ কোটি ৯ লাখ ডলার। পর্যায়ক্রমে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার।

দেশের ইতিহাসে কোনো একক মাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের রেকর্ড হয় গত মার্চে। ওই মাসে শীর্ষ আহরণকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেখানো হয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেখানো হয় ৫০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার আহরণ দেখানো হয়েছিল সৌদি আরব থেকে। চতুর্থ যুক্তরাজ্য এবং পঞ্চম দেখানো হয় মালয়েশিয়াকে। গত অর্থবছরও শীর্ষ দেশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় যুক্তরাজ্য, চতুর্থ হিসেবে দেখানো হয় সৌদি আরব এবং পঞ্চম দেখানো হয় মালয়েশিয়াকে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে সরাসরি ব্যাংক এবং এক্সচেঞ্জ হাউস– এই দুই মাধ্যমে দেশে আসে। এক্সচেঞ্জ হাউসের সংগ্রহ করা রেমিট্যান্স ব্যাংকগুলো কিনে নিয়ে সুবিধাভোগীকে টাকা পরিশোধ করে। দেশের মোট রেমিট্যান্সের বেশি অংশ আসে এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে। যেসব দেশের এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসে, এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিবন্ধিত কোম্পানি বেশি। ফলে প্রবাসীরা যে দেশ থেকেই অর্থ পাঠান না কেন, ক্লিয়ারিং হয় এক্সচেঞ্জ হাউসের নিবন্ধিত দেশ থেকে। অবশ্য প্রতিষ্ঠানগুলো দেশভিত্তিক আলাদাভাবে রেমিট্যান্সের হিসাব করে। তবে ব্যাংকগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আলাদাভাবে না দেখিয়ে ওই দেশের রেমিট্যান্স হিসেবে রিপোর্ট করে। এই ভুল রিপোর্টিংয়ের কারণে প্রায় তিন বছর শীর্ষ রেমিট্যান্স আহরণকারী হিসেবে অন্য দেশের নাম উঠে আসছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে যে দেশের রেমিট্যান্স, সেই দেশের আয় হিসেবে দেখানোর নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যে কারণে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা উদাহরণ দিয়ে জানান, বাংলাদেশি কোনো ব্যাংক হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১০ লাখ ডলার কিনেছে। সেখানে পাঁচ দেশের রেমিট্যান্স আছে। এটা দেশভিত্তিক আলাদাভাবে না দেখিয়ে পুরোটাই হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের রেমিট্যান্স হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিপোর্ট করে আসছিল। এতে করে প্রকৃত চিত্র প্রতিফলিত হতো না। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথাও উঠেছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে দেশভিত্তিক প্রকৃত চিত্রের আলোকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। সব ব্যাংক যথানিয়মে রিপোর্ট করলে আর ভুল রিপোর্টিং হবে না।

২০২২ সালের জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত সব মাসেই সৌদি আরব শীর্ষে ছিল। হঠাৎ করে ওই মাসে যুক্তরাষ্ট্রকে শীর্ষ আয়ের দেশ দেখানো হয়। দ্বিতীয় ছিল সৌদি আরব এবং তৃতীয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। অবশ্য সব মিলিয়ে ওই অর্থবছরে সৌদি আরব শীর্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান উঠে আসে দ্বিতীয়। আর তৃতীয় ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে