মো. জাহিদুল ইসলাম : দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশে আসতে তার আইনগত কোনো বাধা নেই। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি দেশে ফিরবেন। এদিকে গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্তি ব্যাপক আকারে পালন করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। দলটি ওই দিন ঢাকায় মহাসমাবেশ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। দেশে ফিরে সশরীরে মহাসমাবেশে তারেক রহমান যোগ দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমানের সঙ্গে থাকবেন সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান ও তাদের একমাত্র সন্তান ব্যারিস্টার জায়মা রহমান। তারা সরাসরি লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নামবেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সব পরিকল্পনা সম্পন্ন করেছে বিএনপি।
বিএনপিতে নতুন মুখের ছড়াছড়ি, একক প্রার্থী জামায়াতেরবিএনপিতে নতুন মুখের ছড়াছড়ি, একক প্রার্থী জামায়াতের
জানা যায়, দেশে ফিরে তারেক রহমান কোথায় উঠবেন এটি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা ঠিক করছেন। গুলশান-২ অ্যাভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর ডুপ্লেক্স বাড়িটি তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে সেখানে তিনি থাকবেন কি না তা নিশ্চিত নয়।
দলীয় সূত্রে আরো জানা যায়, তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের কাছে বিশেষ নিরাপত্তা চাইবে বিএনপি। পাশাপাশি চেয়ারপারসনের নিজস্ব যে নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফ রয়েছে তারা সার্বক্ষণিক থাকবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া তার অফিস ও বাসভবন ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আমার দেশকে বলেন, তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন সেই সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন। এটি আগাম বলা যাবে না। তবে তার দেশে আসার আগে বড় সারপ্রাইজ থাকবে। দেখা যাবে হঠাৎ একদিন ঘোষণা আসবে আগামীকাল দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। তার দেশে ফেরার দিনে কাউকে ঘোষণা দিয়ে ঢাকায় আসতে বলা লাগবে না। সে দিন ঢাকার এয়ারপোর্ট থেকে বাসা পর্যন্ত এমন জনস্রোত নামবে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কেউ দেখেনি।
শিক্ষার্থীদের জন্য ফের চালু হলো মার্কিন ভিসা, থাকছে কঠোর শর্তশিক্ষার্থীদের জন্য ফের চালু হলো মার্কিন ভিসা, থাকছে কঠোর শর্ত
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি আমার দেশকে বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার ও কোনো রাজনৈতিক দল কেউ তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে কোনো কথা বলেনি। সরকার যদি আরেকটু সিরিয়াস হতো তাহলে দায়িত্ব নিয়ে তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে পারতেন। তাহলে দেশের মাটিতে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠক হতো।
এ্যানি আরো বলেন, ৫ আগস্টের পর তারেক রহমান চাইলে দেশে আসতে পারতেন না। কারণ এদিকে বাংলাদেশ ও লন্ডনে কিছু আইনি বাধা ছিল। বর্তমানে তিনি সব বাধা থেকে মুক্ত। এখন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রস্তুতির সময়, তিনি শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন।
১/১১-এর জরুরি সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডন যান তিনি। তখন থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন তারেক রহমান। লন্ডনে থাকাকালে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান তিনি। সূত্র: আমার দেশ