বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০১:৫২:১৮

ওষুধে 'মাসকুলার' গরুর বিকল্প এবার 'অরগ্যানিক' গরু

ওষুধে 'মাসকুলার' গরুর বিকল্প এবার 'অরগ্যানিক' গরু

সাইয়েদা আকতার : প্রতিবছর কোরবানীর ঈদের আগে গরু কিনতে গিয়ে অনেকেরই আশা থাকে হৃষ্টপুষ্ট আর সুন্দর দেখতে একটা গরু কিনে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছে, হাটগুলোতে ওঠা নধরকান্তি, উজ্জ্বল গরুগুলোর একটি বড় অংশকে ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে ঐ অবস্থায় আনা হয়।

ফলে স্বাস্থ্য-ঝুঁকি নিয়ে আতংকে ভোগেন অনেক ক্রেতা।

কিন্তু এ বছর দেখা গেছে এক ব্যতিক্রমী প্রচারণা - রীতিমত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে অরগানিক অর্থাৎ ওষুধ বা রাসায়নিক ইনজেকশন না দিয়ে, প্রাকৃতিক ভাবে লালনপালন করা গরু বিক্রি করছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

গাবতলীর গরুর হাটে একজন ক্রেতা বলছিলেন যে কেনার সময় কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখেন তাঁরা।

একটু বেশি মাসকুলার দেখতে গরু দেখলেই বোঝা যায়, সেগুলা ইনজেকশন দেয়া। চেষ্টা করি সেসব না কিনতে।

হাটের একটু ভেতরে এগোতেই চোখে পড়ে, শামিয়ানা খাটানো এক অংশে কয়েক সারি গরু দাড় করিয়ে রাখা হয়েছে।

পারটেক্স ডেইরী নামে এক প্রতিষ্ঠানের আনা এই গরুগুলো আকারে বেশ বড়, স্বাস্থ্যবান আর সুন্দর দেখতে।

তাদের মালিক আর পালনকারীরা বললেন, এই গরুগুলো অরগ্যানিক।

অন্য গরুর সাথে এগুলোর তফাৎ কি, তা জানতে চাইলে গরুর তদারককারী মো আলম বলেন, ফারাক হইল, আমাদের এসব গরুগুলোকে কোন রাসায়নিক খাওয়াই নাই, ভেজাল খাওন দেই নাই। তার জন্য এগুলো টাইট, সুন্দর। এগুলা ধরলে হাত দাবে না, কিন্তু ওষুধ দেয়াগুলো ধরলেই হাত দাইবা যায়।

শামিয়ানার আরেক অংশে রয়েছে শরীফ অ্যাগ্রোভেট লিমিটেড নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের গরু।

এখানকার কর্মী আওলাদুজ্জামান রাসেল বলছিলেন, তাদের আনা গরুগুলো কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুর চেয়ে কেবল দেখতেই স্বাস্থ্যবান নয়, তারা প্রত্যেকেই একেকটি সুস্থ্য প্রাণী।

তিনি বলেন, কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু দেখা যায়, বেশিরভাগ সময় বসে থাকে, হাঁপায়। তারা গরম সহ্য করতে পারেনা, শামিয়ানার ভেতরে ফ্যান দিয়ে তাদের ঠিক রাখতে হয়।

তবে পাশেই অন্য কয়েকজন বিক্রেতা কিছুটা খোঁচা দেয়ার সুরেই বললেন, এসব গরু তেমন একটা বিক্রি হচ্ছেনা।

ঠিক পাশের সামিয়ানার নিচে রাখা বিশালাকৃতির কয়েকটি গরুর মালিক মো. আব্দুল লতিফ বলেন, কৃত্রিমভাবে গরু লালন পালনের পুরো বিষয়টিই প্রচারণা মাত্র। গরুরে মেডিসিন দিলে বাঁচে নাকি! আর আমাদের এই গুলা যা খায়, তাতো মানুষেও খায়না। এজন্য তারা স্বাস্থ্যবান।

তিনি বলেন, এসব গুরু ছোলা খায়, চিটাগুড় খায়।

কয়েকজন ক্রেতাকে অবশ্য দেখা গেল ঘুরে ঘুরে অরগ্যানিক গরুগুলোকে পরখ করছেন।

তাদের একজন বললেন, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তিনি এই গরুগুলোর সঙ্গে অন্য গরু মিলিয়ে দেখছেন। সবাই স্বাস্থ্যকর গরু কিনতে চায়।

ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য গরুর তুলনায় এসব গরুর দাম কিছুটা বেশি।

অরগ্যানিক গরুর তদারককারীরা বলছেন, এসব গরু পালনে এবং তাদের প্রাকৃতিক উপায়ে রোগবালাই থেকে বাঁচাতে অনেক খরচ করতে হয়েছে।

যে কারণে সেই খরচ না উঠে এলে তাঁরা কেন বিনিয়োগ করবেন?-বিবিসি
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে